পাতা:রবি-দীপিতা.pdf/২৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষ-সপ্তক বৈশাখ ১৩৪২ স, রে, গা, মা, পা, ধ, নি এই স্বরসমষ্টিকে সপ্তক বলে। উদারা, মুদ্রারা, তারা এই তিনটি গ্রাম । শেষ গ্রাম হোচ্ছে তারা। এই অনুসারেই শেষ সপ্তক বলতে তারাগ্রামের সাতটি স্বরের সমষ্টি বোঝায়। কবির শেষ জীবনের এই কাব্যগ্রন্থে জীবনের নানা মুর এসে স্থান পেয়েছে। নামটিতে বোধ হয় এই কথাই বুঝা যায়। এই কাব্যগ্রন্থে ছেচল্লিশটি গদ্য কবিতা আছে। যদিও কবি সাতটি স্বরের কথা বলেছেন তবুও আমাদের মনে হয় যে তার প্রধান স্বরটিই হোচ্ছে গতির স্বর, কবি তার যৌবনের প্রান্তসীমা থেকে যা কিছু অনুভব কোরেছেন, স্মৃতি-বিস্মৃতির নানা বর্ণে যা হয়ে আছে রঞ্জিত, দুঃখ মুখের বাষ্প ঘনিমায় যা প্রাপ্ত হোয়েছে জড়িমা, ঝরে পড়া ফুলের ঘনগন্ধে স্বপ্ন মৌমাছির গুনগুনানিতে যে অলক্ষ্য সৌরভ ছায়ার বেড়ায় বদ্ধ প্রাচীন দিনগুলির মধ্যে আবদ্ধ হোয়ে আছে, কবি সেগুলিকে টানতে চান স্থষ্টির মহাসাগরে ; চলতে চান লক্ষ্যহীন পথে, চলন্ত দিন-রাত্রির কলবোলেব মধ্যে আপনাকে মিলিয়ে নিতে চান্‌ শস্য-শেষ প্রাস্তরের স্বদুর বিস্তৃত বৈরাগ্যে। সহস্ৰ বৎসরের নীরব সমাধিতে মগ্ন হোয়ে রয়েছে যে শালবৃক্ষ নিজের ধ্যানকে নিবিষ্ট কোরতে চান তার মধ্যে। এদিকে বাইরে চলেছে অস্তিত্বের ধারা। কাক ডাকছে তেঁতুলের ডালে। চিল মিলিয়ে যাচ্ছে দূৰ নীলিমায়, ডিঙি নিয়ে মাছ ধরছে জেলেরা, বাশের খোটায় স্তন্ধ হোয়ে বসে আছে মাছরাঙা । অতি পুরাতন প্রাণের নানা পণ্য নিয়ে চলেছে প্রাণের এই সহজ প্রবাহ। মানব-ইতিহাসে চলেছে ভাঙা গড়ার নানা লীলা। এই ধারার গভীরে কবি চান আকণ্ঠ ডুবে যেতে। তিনি চান— এর কলধ্বনি বাজবে আমার বুকের কাছে আমার রক্তে মুদ্রতালের ছন্দে।