পাতা:রবি-দীপিতা.pdf/২৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষ-সপ্তক ২৩১ লিখিত একটী কবিতায় সঙ্গীত সম্বন্ধে বলতে গিয়ে বলেছেন যে মানুষের জ্ঞান নিজে মূক, তাই সে করেছে ভাষাকে স্বষ্টি, তারই মধ্যে দিয়েই করে সে আপনাকে প্রকাশ । সেখানে ইঙ্গিত আছে, ব্যাখ্যা নেই ধেমন বোবা বিশ্বের আছে ভঙ্গী, আছে ছন্দ, আছে আকাশে আকাশে নৃত্য ; আবার দেখি পরমাণুতে পরমাণুতে চলেছে একটা নাচের চক্র, ফুটে উঠছে তাতে অযুত লক্ষ রূপ । তারা খুজিছে আপন ব্যঞ্জনা, ঘাসের ফুল থেকে আরম্ভ কোরে আকাশের তারা পৰ্য্যন্ত । মানুষের বুদ্ধি চলা ফেরা কোরতে চায় কথাকে বাহন কোরে, ভাষা যখন পারে না আপনাকে প্রকাশ কোরতে সে খোজে ভঙ্গী, সে খোজে ইসার, অর্থকে উলটিয়ে দিয়ে আনে স্বর, মানুষের বোধ যখন বাহন করে স্বরকে তখন সে মুর সঙ্ঘকে বাধতে চায় সীমায়, ভঙ্গীতে তোলে তাকে নাচিয়ে, সেই সীমায় বন্দী নাচন গানের মধ্যে পায় তার রূপ। যেখানে আমরা পরিচয় দিতে চাই আমাদের জানার, সেখানে পাই পাণ্ডিত্য, আর যার প্রাণ বলে আমি রস পাই, ব্যথা পাই, গান তারই জন্য। এখানে আমরা দেখতে পাই যে ভাষার সীমার মধ্য দিয়ে আমরা জগতের ছন্দ রূপটি উপলব্ধি কোরতে পারি না। সেই রূপটা রয়েছে ভাষার সীমার চেয়ে বহুদূরে, তাকে ইঙ্গিতে প্রকাশ করা যায় গানে । শ্ৰীযুক্ত রাণীদেবীকে কবি লিখছেন, “দূর আমার কাছেই এসেছে। জানালার পাশেই বসে বসে ভাবি— দূর ব’লে যে পদার্থ সে স্বন্দর। মনে ভাবি সুন্দরের মধ্যেই দূর। পরিচয়ের সীমার মধ্যে থেকেও সুন্দর যায় সব সীমণ্ডকে এড়িয়ে প্রয়োজনের সঙ্গে লেগে থেকেও থাকে আলগা প্রতিদিনের মাঝখানে থেকেও সে চিরদিনের।”