পাতা:রবি-দীপিতা.pdf/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফাল্গুনী পূৰ্ব্বে আমাদের দেশে ছলিক বলে একরকম গীতাভিনয় হোত, সেই অভিনয়ে অভিনেতা আপন মনের কোনও গৃঢ় অভিপ্রায়, অভিনয় ও গানের অছিলায় প্রকাশ করত ; নাচ ও গান ছিল তার প্রধান অঙ্গ, পাত্রপাত্রীর চরিত্র সমাবেশের বাহুল্য তা’তে কোনও স্থান পেত না। কাব্যরসের মধ্য দিয়ে অভিনেতার কোনও ইঙ্গিত যাতে স্বক্ষভাবে ফুটে উঠতে পারে—এই ছিল তার প্রধান লক্ষ্য। ফাল্গুনীকেও আমরা একরকমের নূতন ধরণের ছলিক বলতে পারি। তবে এতে কোনও ব্যক্তিগত ইঙ্গিত নেই। সমস্ত জগতের লীলাপ্রবাহের মধ্য দিয়ে যে ইঙ্গিতটি যুগযুগান্তর ধীরে নিত্য নব ভাবে ফুটে উঠছে, সেইটিই হচ্ছে এই ছলিকের ভিতরকার কথা। গ্রীষ্মের রুদ্র-নিঃশ্বাসের প্রবল ঘুর্ণিতে যখন দিক্‌বিদিক থেকে যেন একটা চিতা-ভস্মের কুহেলিকা টেনে এনে আকাশের মণিঝলসিত দেহখানিকে ধূসরিত ক’রে দেয়, তখনই দেখতে পাই যে মেঘের খামল জটাভার থেকে স্বৰ্গমন্দাকিনীর ধারাকে উন্মুক্ত করে মহাযোগী আর এক নূতন মূৰ্ত্তিতে সম্মুখে উপস্থিত। শ্মশানের ছাই, পথের ধুলো কোথায় উড়ে গেছে, কোথায় গেছে নীল আকাশের নিরালম্ব নগ্নতা । মেঘের কৃত্তিবাস পরে সৌদামিনী গৌরীকে উৎসঙ্গে নিয়ে দিগন্তব্যাপী মৃদঙ্গনিনাদের মধ্যে এ আর এক নূতন অভিনয় । দেখতে দেখতে আবার পট পরিবর্তন হোল ; চারিপাশে কাশের চামর দুলে উঠেছে, কৃত্তিবাসের সে মেঘবাস আর নাই, এখন তার শুভ্রজ্যোংস্কা-দুকুলের রাজবেশ। শিউলি ফুলের খই ছড়িয়ে তার অভ্যর্থনা আরম্ভ হয়েছে। আবার দেখতে দেখতে বানপ্রস্থের সময় এসে পড়ল, পৃথিবী যেন একটা জীর্ণতা ও ভঙ্গুরতায় একেবারে নিঃশ্ব হয়ে পড়ল। আর সেই সঙ্গেই দেখি যে আমের মুকুলের মুকুট পরে,