পাতা:রবি-দীপিতা.pdf/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

९२ রবি-দীপিতা উপনিষদে দেখা যায় যে নচিকেতা ও যমকে এই প্রশ্ন করেছিলেন আর তিনি তার উত্তর দিয়েছিলেন যে জন্মমৃত্যু কল্পনা মাত্র, একমাত্র চিৎ-স্বরূপ ব্রহ্মই সত্যবস্তু। রবীন্দ্রনাথ কিন্তু এ সমস্ত এড়িয়ে যে জায়গা থেকে উত্তর দিতে চেয়েছেন তা’তে দেখা যায় যে তিনি ব্রাউনিংএর মতন এই জীবনের অপূর্ণতা থেকে অন্ত এক জগতে পরিপূর্ণ সমাপ্তির বাৰ্ত্তা পেয়েছেন এমন কথা বলেন নি। এবং বেদান্তের মত সমস্ত অপুর্ণতাকে তুচ্ছ ও অসত্য বলেন নি। ছবির মধ্যে যেমন আলোছায়ার পরম্পরার ভিতর দিয়ে আলোর নব নব বর্ণবিকাশ ঘটে থাকে, তেমনি জরার ভিতর দিয়ে, মৃত্যুর ভিতর দিয়ে সমস্ত প্রকৃতির এবং মাগুষের যৌবনের নব নব অভিব্যক্তি ঘটে থাকে । সাধারণ ভাবে দেখতে গেলে এ কথাটা বোঝা একটু শক্ত হয়। প্রকৃতির পক্ষে সৰ্ব্বদা আমরা বুঝতে পাবি যে জরার মধ্য দিয়ে প্রকৃতি তার যৌবনের বসন্তোৎসব নিত্য নবভাবে উপভোগ ক’রে থাকেন এবং এই বিচিত্র উপভোগের ও বিকাশের লীলাতেই ঋতুপৰ্য্যায়ের স্ব ; তথাপি মানুষ যে কেমন ক’রে জরাব মধ্য দিয়ে মৃত্যুর মধ্য দিয়ে আপনার যৌবনকে প্রতিবার ফিরিয়ে ফিরিয়ে নূতন ক’রে নিতে পারে এ কথা বোঝা আমাদেৰ পক্ষে একটু কঠিন। মানুষের দেহটা একেবারে ছাই হয়ে যায়, কাজেই তার যে আবার পুনরুখান হ’তে পারে তা আমরা কল্পনা করতে পাবি না। আর যদি বা পারি, হয়ত জন্মান্তরবাদের রূপক আশ্রয় করতে হয় । কিন্তু প্রকৃতির এই শীতবসন্তের লীলা প্রচারকে, যদি কেবল তরুলতাকে নিয়ে পৃথিবী ব্যেপে একই রমণীয়া প্রকৃতি মুন্দরীকে সজীবভাবে দেখতে শিখি তা হ’লেই বুঝতে পারব যে প্রতি শীতের মধ্য দিয়ে তিনিই তার যৌবনকে নব নব ভাবে প্রস্ফুটিত ক’রে উপভোগ করছেন। তাতে পৃথক ভাবে কোনও বৃক্ষের বা লতার কোনও বিশেষ দাবী নেই, তাদের মধ্যে আমরা যে পরিবর্তনটা লক্ষ্য করতে পারি, সেটা একটা সমষ্টিভূত প্রাণশক্তির ব্যষ্টিগত প্রকাশ । তরুলতা জল স্থল আকাশ সূৰ্য্য চন্দ্র গ্রহ নক্ষত্র এই সমস্ত নিয়েই প্রকৃর্তির দেহ ব্যাপ্ত হ’য়ে রয়েছে, এর মধ্যে কোনটারই এর থেকে স্বতন্ত্রভাবে