পাতা:রবি-দীপিতা.pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বলাক ৩১ প্রত্যেকটি বলাকার যে স্থান-সন্নিবেশের বিচিত্র পরিবর্তন ঘটে তাহা আমাদের দৃষ্ট তেমন আকর্ষণ করে না। এই স্থান-সন্নিবেশের বৈচিত্র্যের ফলে বলাকার মালাটি যে বিচিত্র ভাবে বিচিত্ররূপে আমাদের মন করণ করে সেই বর্ণনাই ধলাকার বর্ণনা। আকাশে ঘনকৃষ্ণমণীভুল্য মেঘ উঠিয়াছে, ঝড় উঠিয়াছে, বলাকার মালাগুলি মধ্যে মধ্যে ছিড়িয়া যাইতেছে। বলাকাদের এই দুৰ্দ্দাম বিপদের মধ্যে, মেঘঝঙ্কার-মধ্যে, কোন ভয় নাই, তাহদের মালা যেমন একবার ছিডিয়া যাইতেছে আবার তাহারা গাথিয়া তুলিতেছে, মেঘের সম্মুখে আসিয়া বিপদের সম্মুখীন হইয়া তাহারা যেন নূতন জীবনের সন্ধান পায়। গর্ভাধানক্ষণপরিচয়া নমাবদ্ধমালাঃ সেবিষ্যতে নয়নস্থ ভগং থে ভবস্তং বলকাঃ ॥ তাহারা মানসসরোবরের যাত্রী, বিপদের মধ্যেই তাহাদের সম্পদ ; তাই সমস্ত বিপৎপাতকে অতিক্রম করিয়া তাহারা তাহাদের অজানা মানসলোকের দিকে যাত্রা করে। ‘বলাকা’ বলিলেই আমাদের মনে সৰ্ব্ববিপজ্জয়ী এই একটা অজানা ! উদ্দেশ্যে অন্তহীন গতিচ্ছদের কথা মনে পড়ে। ‘বলাকা’ গ্রন্থখানিতেও এমনি একট। গতিচ্ছন্দের লীলাভঙ্গী চিত্রিত করিতে চেষ্টা করা হইয়াছে। বলকার কবিতাগুলি ১৩২১ হইতে ১৩২৩এর মধ্যে লিখিত । ১৩২৪-এর আশ্বিন ও কার্ভিকের "সবুজপত্রে” রবীন্দ্রনাথ “আমার ধৰ্ম্ম” নামে একটা প্রবন্ধ লিখেন। কালগত ঐক্যবশত: মনে করা যাইতে পারে বলাকার কবিতার মধ্যে যে ভাবধারার ইসার অাছে এই প্রবন্ধে তাহার নিদর্শন বা সঙ্কেত পাওয়া যাইতে পারে। এই প্রবন্ধে তিনি লিথিয়াছেন “কোন” ধৰ্ম্মটি তার ? যে ধৰ্ম্ম মনের ভিতরে গোপনে থেকে তাহাকে স্বষ্টি করে তুলেছে। জীবজন্তুকে গ’ড়ে তোলে তার অন্তর্নিহিত প্রাণধৰ্ম্ম । সেই প্রাণধৰ্ম্মটির খবর রাখা জন্তুর পক্ষে দরকারই নাই। মানুষের আর একটি প্রাণ অাছে সেটা শারীর প্রাণের চেয়ে বড়— সেইটে তার মনুস্তৃত্ব। এই প্রাণের ভিতরকার স্বজনীশক্তি হচ্ছে তার ধৰ্ম্ম। এইজন্য আমাদের ভাষায় ধৰ্ম্মশব্দ খুব একটা অর্থপূর্ণ শব্দ । জলের জলত্বই হচ্ছে