পাতা:রবি-দীপিতা.pdf/৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-৫২ রবি-দীপিত যখন সেই জীবনপ্রবাহ হইতে একটি বিন্দুকে, জীবনের মালা হইতে একটি বীজকে স্বতন্ত্র করিয়া, চিরন্তন করিয়া আমরা প্রতিষ্ঠিত করিতে চেষ্টা করি তখন সেই সীমাবদ্ধের মধ্যে আমাদের চরম সার্থকতা হয় কি না ? সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হইয়াছে শা-জাহান কবিতায় । বিচ্ছিন্ন প্রেমের মধ্যে, আটের বিচ্ছিন্ন স্থষ্টির মধ্যে জীবনের যথার্থ সার্থকতা নাই । জীবনের ষথার্থ সার্থকতা সেইখানে যেখানে স্রষ্টা তাহার নিজের স্বষ্টিকে অতিক্রম করেন। উপনিষদ বলিয়াছেন ; তদৈক্ষত বহু স্যাম্ তিনি বহু হইতে আরম্ভ করিয়া আপন ঈক্ষণ ক্রিয়ায়, আপন স্বরূপদর্শনের সুদৰ্শন-চক্রে এই জগৎ স্বষ্টি করিয়াছেন । জগৎ তাহারই স্বরূপের প্রতিবিম্ব মাত্র। কিন্তু এই প্রতিবিম্বের মধ্যে তিনি আপনাকে নিঃশেষে ক্ষয় করিয়া ফেলেন নাই। নার্সিসাস-এর মতন আপন প্রতিবিম্বের সৌন্দৰ্য্য দেখিয়া মোহান্ধ হইয়া আপনাকে জড় করিয়া ফেলেন নাই। কিন্তু নিরন্তর স্থষ্টির কাৰ্য্যের মধ্য দিয়া তিনি আপনার স্বরূপকে সার্থক করিয়া তুলিতেছেন। স্থষ্টির মুখে বাধা উত্তীর্ণ হইয়া আবার স্বষ্টি, এমনি করিয়া চির-চঞ্চল স্বভাবের মধ্য দিয়া আপনার আচঞ্চল সত্যস্বরূপকে সার্থক করিয়া তুলিতেছেন। কোন স্বষ্টিতেই তিনি বাধা পড়িয়া যান নাই। স্থষ্টিই অপর একটি স্বষ্টির কারণীভূত হইয়া সম্বগ্রের মধ্যে তাহার আত্মপরিচয় লাভ করিয়াছে। বিলাকা’র প্রথম সাতটি কবিতায় অন্তর্জগতের দিক দিয়া এই লীলাটি চিত্রিত করা হইয়াছে । যদি “বিশ্বভারতীর” অভিভাবকগণের তরফ হইতে কোন খেসারৎ দাবীর ভয় নী থাকিত তবে বিলাকা’র কোনও নূতন সংস্করণ করিতে গেলে আমি এইখানে ‘বলাকা’র প্রথম পৰ্ব্ব বলিয়া সূচনা করিতাম। চঞ্চলা’ কবিতা হইতে আরম্ভ করিয়া এই লীলারই বাহ্য জগতের পরিচয় ও বাহ হইতে অস্তরে আসিবার সেতুর পরিচয় আমরা উপলব্ধি করিতে পারি। কিন্তু 'চঞ্চলা’ কবিতাটি আরম্ভ করিবার পূৰ্ব্বে ঠিক শা-জাহান কবিতাটির পরে,— কে তোমারে দিল প্রাণ রে পাষাণ