পাতা:রবি-দীপিতা.pdf/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ge , রবি-দীপিতা স্বজনীশক্তির মধ্যে তাহার আত্মসংশোধনের বিচিত্র লীলা একদিকে যেমন শাস্তু কোমলের মৃদ্ধ সংস্পর্শে প্রকাশ পায় অপরদিকে তেমনি বঙ্গের জলদচ্চিশিখায় আপনাকে প্রকটিত করে। ইহাই স্বজনীশক্তির আত্মবিচারের পদ্ধতি। প্রকৃতির সৰ্ব্বত্র নিত্য এই বিচার চলিয়াছে। প্রকৃতির দান আমরা সৰ্ব্বদাই পাইতেছি। অনেক সময়ে এই দানের যথার্থ তাৎপৰ্য্য বুঝি না বলিয়া ইহার সম্পদে নিজেকে জালের দ্বারা আবদ্ধ করিয়াছি। কেবল পাওয়া দ্বারা চাওয়ার মাত্রা বাড়াইয়াছি । এ পাওয়ার তৃষ্ণায় চিত্ত ভরিয়া উঠে, তৃপ্তির শক্তি দেয় না। তখনই আসে শাস্তি, তখনই আসে পূর্ণতা, তখনই আসে সার্থকতা, তখনই আমাদের অন্তরের নিৰ্ম্মল বোধিবৃক্ষের আলোতে আমরা এই দানের ভূপে আমাদিগকে আবদ্ধ না করিয়া আমাদের আত্মস্বরূপের হাতে আমাদিগকে সমর্পণ করি । আর এক জায়গায় (১৮) কবি বলিতেছেন, যতক্ষণ আমরা স্থির হইয়া থাকি এবং সতর্ক বুদ্ধি দ্বারা বিশ্বকে খণ্ডবিখণ্ড করিয়া, ছিন্নবিচ্ছিন্ন করিয়া, তত্ত্ব অন্বেষণের চেষ্টায় ব্যস্ত থাকি, ততক্ষণ বিনিদ্র রজনীর চিন্তাভারে আমাদের শাস্তি অপহৃত হয়। কিন্তু যখনই চলার বেগ বিশ্বের আঘাত আমাদের গায়ে লাগে, তখনই আমাদের আবরণ ছিন্ন হইয়া যায়, এবং আমাদের অমৃতময় নবযৌবন আমাদের মধ্যে আবিভূত হইয়া সম্মুখের দিকে টানিয়া লইয়া যায়, এবং তাহার আনন্দগানে অন্তর্গগন পূর্ণ হইয় উঠে। পৌষের পাতাঝরা তপোবনের মধ্যে যখন বসন্তের মাতাল বাতাস উচ্চহাস্তে টলিয়া পড়ে, তখনও আমরা প্রকৃতির মধ্যে আমাদের এই গভীর সত্যকেই উপলব্ধি করিতে পারি। বয়সের জীর্ণপথের শেষে মরণের সিংহদ্বার পার হইয়া প্রকৃতির সঙ্গে অবিচ্ছিন্নভাবে মানুষ তাহার চিরযৌবনকে জীবনের এপারে ওপারে বারম্বার সাক্ষাৎকার করিতেছে। আমাদের জীবনের সহিত প্রকৃতির একটি অবিচ্ছিন্ন যোগ আছে। সেই যোগটিকে আমরা তখনই প্রত্যক্ষ করিতে পারি, যখন আমরা তাহাকে ভালবাসি। প্রকৃতির সত্য তখনই আমাদের মধ্যে আপনাকে আত্মপ্রকাশ