পাতা:রবি-দীপিতা.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬২ রবি-দীপিত মৃত্যুর সহিত এই যে একটা বিচ্ছেদ আমরা দেখিতে পাই, ইহার বিরুদ্ধে কোন প্রমাণ দেখান কঠিন । আমাদের চাওয়া যেমন সত্য, আমাদের ছাড়িয়া যাওয়াও সেই রকম সত্য । কিন্তু জীবনের চাওয়ার মধ্যে বহির্জগতের সঙ্গে যে ঐক্য পাওয়া গিয়াছিল, ছাড়িয়া যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যে সে ঐক্য, সে মিল, সে সামঞ্জস্য একেবারে বিনষ্ট হইয়া যায়, তাহা কিছুতেই বিশ্বাস করা যায় না। বিশ্বকে ও বিশ্বের অনুভবকে কবি কোনক্রমেই একান্ত প্রবঞ্চনা বলিয়া স্বীকার করিতে পারেন না। পরিণামে যদি উভয়ের মধ্যে এমন গভীর অসামঞ্জস্য থাকে, তবে আরম্ভের এ সামঞ্জস্তের কোন অর্থ নাই। “এমন একান্ত করে’ চাওয়া এও সত্য যত এমন একান্ত ছেড়ে যাওয়া সেও সেই মতো । এ দুয়ের মাঝে তবু কোনোখানে আছে কোন মিল ; নহিলে নিখিল এত বড় নিদারুণ প্রবঞ্চনা হাসিমুখে এতকাল কিছুতে বহিতে পারিত না।” এই মিলটুকু কোথায়, এবং জীবনের বাহিরে এই মিলের স্বরূপ কি, এই সম্বন্ধে কবি অন্ত কোন স্থানে যে বিশেষ কিছু আভাস দিয়াছেন এমন মনে হয় না; বরং জীবনের এই মিলের কথা যেন হঠাৎ একটা নূতন স্বর বলিয়া মনে হয় । রবীন্দ্রনাথের প্রায় অধিকাংশ কবিতাতেই যে ব্যথার সুরের, যে বিরহের ক্রদনের পরিচয় আমরা পাই তাহার সত্য পরিচয় এই জীবনের মধ্যে । আমাদের সমস্ত বিকাশের মধ্য দিয়া আমরা ষে অনাগতের দিকে গড়িয়া উঠিতেছি, তাহারই আকর্ষণ আমাদের প্রত্যেক জীবনের মধ্যে আমরা অনুভব করি।