পাতা:রবি-দীপিতা.pdf/৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ه اللاه ছন্দ ও উপমাকে অমুকুল সন্নিবেশবৈচিত্র্যে বিভবশালী করিয়া তুলিয়া অন্তর্লোকের সাক্ষাৎকারকে বহির্লোকে মূৰ্ত্ত করিয়া তোলেন। তৃতীয় স্তরে দেখা যায় যে কবি তাহার মূর্ত স্বষ্টির মধ্যে তাহার অমূৰ্ত্ত হষ্টির প্রতিবিম্ব দেখিয়া আনন্দে উৎফুল্ল হইয়া ওঠেন, ইহাই তাহার তৃতীয় আলোচন। ইংরাজীতে Personality নামে একটি শব্দ আছে, কিন্তু তাহার পরিচয়ের বিশেষ নির্ণয় নাই । সেইজন্য এই শব্দটির আড়ালে বিদ্যা অপেক্ষা অবিদ্যার প্রাচুর্য্য বেশী। কোন বিখ্যাত দাশনিক বলিয়াছেন, যে “Quality of Personality is known to me because I have Perception—in the strict sense of the word—of one being which possesses the quality, namely myself.” এই প্রসঙ্গে অনেক তত্ত্বালোচনার দ্বার উন্মোচিত হইতে পারে, কিন্তু তত্ত্বে পৌছান যাইতে পারে কি না সে বিষয়ে সন্দেহ আছে। অনেকে বলেন, যে কবিতা কবির personalityর প্রকাশ। এখানে পূৰ্ব্বোক্ত লক্ষণ যে বিশেষ খাটে, তাহা মনে হয় না। কবি যে তাহাকে জানেন তাহারই পরিচয় যে তাহার কবিতায় পাওয়া যায় একথা বলা চলে না । কিন্তু কবি তাহার কবিতায় যাহা প্রকাশ করেন, তাহার একদিকে আছে ভোগ, আনন্দোপলব্ধি, অপরদিকে আছে বস্তু বা অর্থ। কোন বস্তুকে অবলম্বন করিয়া কবির আনন্দোপলব্ধি কি রকম বিচিত্র বর্ণচ্ছটায় তাহার অন্তরকে রঙ্গীন করিয়া তোলে, শব্দ, ছন্দ ও উপমার ত্ৰিদণ্ডের উপরে কবি তাহাই সংস্থাপিত করিয়া লোকলোচনের সম্মুখে উপস্থাপিত করিতে চেষ্টা করেন। প্রত্যেক আনন্দোপভোগেরই একটি বিশেষ রীতি আছে, বৈশিষ্ট্য আছে, স্বতন্ত্রতা আছে। ইহা মানুষের সমগ্র ইতিহাসের সহিত জড়িত। চিত্তপটের ভাবপদ্ধতির মধ্যে ইহার নিয়ন্ত্রণের স্বত্রটি ব্যাপ্ত হইয়া রহিয়াছে। যাহারা জন্মাস্তর মানেন, তাহাদের মতে মানুষের চিত্তপটের ভাবপদ্ধতির ইতিহাস অনাদি । এই অনাদি ইতিহাসকে তাহারাবাসনা বলেন । যাহারা জন্মাস্তর মানেন না, তাহাদের মতে এই ইতিহাসের ফল লইয়াই মানুষের আরম্ভ। ইহাই মানুষের চিত্তধাতু।