পাতা:রবি-দীপিতা.pdf/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१२ রবি-জীপিতা পুরুষ বিশ্বের প্রাণস্বরূপে বৰ্ত্তমান আছেন—যো দেবোহন্ত্রেী যে অঙ্গ, যে বিশ্বং ভুবনমাবিবেশ—তিনিই প্রাণের প্রাণ হইয়া আমাদের মধ্যেই রহিয়াছেন, তাহারই প্রাণশক্তি একদিকে যেমন বিশ্বভুবনের বিচিত্রতার মধ্যে প্রকাশ পাইতেছে, অপরদিকে তেমনি বিশ্বের সহিত পরমাত্মীয়রূপে সম্বন্ধ হইয়া যে জীবলোক রহিয়াছে তাহার মধ্য দিয়া নানা কেন্দ্রে স্বতন্ত্র স্বচ্ছন্দ পরিস্ফূৰ্ত্তিতে বিকাশ পাইতেছে। বৃক্ষের যেমন পত্র একটি অবয়ব, তেমনি আমাদের দেহও এই পরমজীবনবৃক্ষের একটি অবয়ব মাত্র ! সেইজন্য সেই দেহের মধ্য দিয়া যে স্বজনীশক্তি আত্মপ্রকাশ করিতেছে তাহার স্বতন্ত্রত থাকিলেও সে স্বতন্ত্রতার কোনও বস্তুত নাই। তাহা বিরাট জীবনীশক্তির একটি উৰ্ম্মি মাত্র, সেই উৰ্ম্মিটি তাহার আধারচ্যুত হইয়া পুনরায় কি আধারে আপনাকে প্রকাশ করিবে, কি রূপে, কি বর্ণে আপনাকে চিত্রিত করিবে, তাহা আমরা জানি না। আমরা কেবলমাত্র এই জানি যে, তাহা বিরাট জীবনীশক্তির অঙ্গীভূত প্রাণপদার্থ ; কাজেই কোন না কোনও স্বষ্টিরচনার মধ্যে কোন না কোনও নবীন ভঙ্গিতে তার সার্থকতা সুনিশ্চিত । সে সার্থকতা পূৰ্ব্ব সার্থকতার তুল্য না হইলেও কোনও ক্ষোভ নাই কোনও নিরাশা নাই। আমাদের ইহলোকের জীবনে আমাদের যে সার্থকতা জানি, তাহ জানি বলিয়াই সে সব চেয়ে বড় সার্থকতা, তাহা মনে করিবার কোনও কারণ নাই। ইহলোকেও আমরা দেখি যে, যতটুকু সার্থকতা আমরা জীবনের কোনও একটি অবস্থায় প্রত্যক্ষ করি তাহা হইতে হয়ত অনেক বড় সার্থকতা পরবর্তী অজানা জীবনে রহিয়াছে ; সেইজন্য অজানাকে আমাদের ভয় নাই । জানার মধ্যে যে প্রীতি ও সমাদর পাইয়াছি, অজানার মধ্যে যে তাহার হানি হইবে এই ভয়ের কোনও কারণ নাই। জীবনে যেটুকু পাই সেটুকু কেবলমাত্র তার আপন স্বচ্ছন্দ গতিশক্তির কোনও অজানার উদ্দেশে ফুটিয়ে উঠা । জানা হইতে অজানার এই যে নিরস্তর বিকাশ চলিয়াছে, ইহা হইতে আমরা এইটুকু বুঝিতে পারি যে, যে অজানা আমাদের হৃদয়ের মধ্যে বসিয়া আমাদিগকে গড়িয়া তুলিতেছেন তিনি আমাদের পরম প্রেমের পাত্র। তিনি আমাদের জানার জগতে