পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৫৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( ૨ર রবীন্দ্র-রচনাবলী Y ® প্রায় মধ্যাহ্নে আমরা শ্ৰীনগর ছাড়িলাম এবং নদীর প্রধান ধারাটি বাহিয়া অবাধে ভাসিতে ভাসিতে নগরীর মধ্য দিয়া চলিলাম। অসংখ্য বিপণি, চিত্রাপিতবং সেতু সকল এবং তীরবেগে চতুর্দিকে ধাবমান বহুসংখ্যক ক্ষুদ্র নৌকা, চারিদিক হইতে মনোযোগ আকর্ষণ করিতেছিল । সন্ধ্যায় নদীতীরের সাদিপুর-নামক একটি গ্রামে আমরা নৌকা বাধিলাম ; পরদিন প্রাতে প্রায় ছয়টায় ছাড়িয়া সম্বলে এবং মানসবল সরোবরের প্রবেশমুখে প্রায় বেলা নয়টার সময় পৌছিলাম । মাঝিরা ঝড়ঝঞ্জার সময়ে এই সরোবরকে বড়ো ভয় করে এবং সাধারণতঃ তাহারা তীরের কাছ ঘুরিয়া মন্দগতিতে যাওয়াই পছন্দ করে। সরোবরের দূরতর প্রাস্তে একটি উৎসের নিকট আমরা নৌকা বাধিলাম এবং সকল সরোবরের মধ্যে সুন্দরতম এই সরোবরের সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট দৃশুটি দেখিতে পাইলাম । ইহার গভীরতাকে যে অতলস্পর্শ বলিয়া অনুমান করা হয়, তৎসম্বন্ধে অনেক গল্প প্রচলিত আছে, এবং শুনা যায় একজন লোক, ইহার তলদেশে পৌছিতে পারে, এমন একগাছি দড়ি তৈয়ারি করিতেই সারাজীবন কাটাইয়াছে, কিন্তু কোনো ফল পায় নাই । 이 সেখানে আমরা এক সপ্তাহ কাটাইলাম, একদিন ঘোড়ায় চড়িয়া সিন্ধ, উপত্যকার মুখে অবস্থিত গান্ধৰ্ব্বল দেখিতে বাহির হইলাম। সরোবরের পাশ্ব বাহিয়া উচ্চ ভূমির উপরে ঘোড়া ছুটাইবার জন্য একটি অতি সুন্দর খোলা জায়গা দেখিতে পাইলাম ; এমন সুযোগ ছাড়িবার নয়। উলার সরোবর আমাদের তৎপরবর্তী লক্ষ্য ছিল,—এইটি সকল সরোবরের চেয়ে বড়ো, সভ্যদেশ হইতে সকলের চেয়ে দূরে অবস্থিত। এই সঙ্গে এখানে এই কথাটিও জুড়িয়া দিই যে, ময়দা সঞ্চয় করিয়া রাখিয়াছিলাম বলিয়া এবং নিজেদের রুটি নিজেরা তৈয়ারি করিয়াছিলাম বলিয়া দেখা গেল, আমাদের অধিক সুবিধা হইয়াছে। দুগ্ধসম্বন্ধে আমরা গ্রামগুলির উপরে নির্ভর করিয়াছিলাম । >し* প্রত্যুষে আমরা মানসবল সরোবর ছাড়িলাম এবং সম্বল গ্রামে ঘোড়ায় চড়িয়া যাওয়াই পছন্দ করিয়া নৌকাগুলিকে আমাদের অনুসরণ করিতে বলিলাম। বৃহৎ