পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S S२ রবীন্দ্র-রচনাবলী যুবরাজ। তোমার তলোয়ারও যেমন, তোমার জিহবাও তেমনি, ছুই-ই খরধার—ষার উপর গিয়ে পড়ে তার একেবারে মর্মচ্ছেদ না করে ফেরে না । রাজধর। দাদা, তুমি আমার জন্তে ভেৰো না। খা সাহেব জিহবায় যতই শান দিন না কেন আমার মৰ্মে আঁচড় কাটতে পারবেন না । ইশা খা । তোমার মর্ম পায় কে বাবা । বড়ো শক্ত । . ইন্দ্রকুমার। যেমন, হঠাৎ আজ রাত্রে তোমার শিকারে যাবার শখ হল, এর মর্ম ভালো বোঝা যাচ্ছে না । যুবরাজ ! আহা ইন্দ্রকুমার। প্রত্যেক কথাতেই রাজধরকে আঘাত করাটা তোমার অভ্যাস হয়ে যাচ্ছে । রাজধর । সে-আঘাতে বেদন না পাওয়াও আমার অভ্যাস হয়ে গেছে । ইন্দ্রকুমার। দাদা, আজ রাত্রে শিকারে যাওয়াই তোমার মত না কি ? যুবরাজ। তোমার সঙ্গে, ভাই, শিকার করতে যাওয়াই বিড়ম্বনা। নিতাস্ত নিরামিষ শিকার করতে হয়। তুমি বনে গিয়ে বড়ো বড়ো জন্তু মেরে আন, আর আমরা কেবল লাউ কুমড়ে কচু কাঠাল শিকার করেই মরি। ইশা খা। (ইন্দ্রকুমারের পিঠ চাপড়াইয়া ) যুবরাজ ঠিক বলেছেন পুত্র ८डाबाब তীর সকলের আগে ছোটে এবং নির্ঘাত গিয়ে লাগে—তোমার সঙ্গে পেরে উঠবে কে । ইন্দ্রকুমার। না দাদা, ঠাট্ট নয়। তুমি না গেলে কে শিকার করতে যাবে। যুবরাজ । আচ্ছা চলো। আজ রাজধরের ইচ্ছে হয়েছে, ওকে নিরাশ করব না। ইন্দ্রকুমার । কেন দাদা, আমার ইচ্ছে হয়েছে বলে কি যেতে নেই ? যুবরাজ। সে কী কথা ভাই, তোমার সঙ্গে তো রোজই যাচ্ছি। ইন্দ্রকুমার। তাই বুঝি পুরোনো হয়ে গেছে ? যুবরাজ ! আমার কথা অমন উলটো বুঝলে বড়ো ব্যথা লাগে । ইন্দ্রকুমার। না দাদা ঠাট্টা করছিলুম—চলো প্রস্তুত হই গে। ইশাখ। ইন্দ্রকুমার বুকে দশটা বাণ সইতে পারে কিন্তু দাদার সামান্য অনাদরটুকু সইতে পারে না । [ অমুচরগণ ব্যতীত সকলের প্রস্থান অনুচরগণ প্রথম । কথাটা তো ভালো ঠেকছে না হে। আমাদের ছোটো কুমারের বহুবিস্তার দৌড় তো সকলেরই জানা আছে—উনি মধ্যম কুমারের সঙ্গে অস্ত্রপরীক্ষায় এগোতে চান এর মানে কী ?