পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৫৫

ঘরে-বাইরে ఫిలిసె অস্ত্যেষ্টিসৎকারে তোমাদের গ্রামে এই প্রথম চিতার আগুন জলল—এই ছাই পবিত্র—এই ছাই গায়ে মেখে ম্যানচেস্টারের জাল কেটে ফেলে, নাগা সন্ন্যাসী হয়ে তোমাদের সাধনা করতে বেরোতে হবে । আমি পঞ্চুকে বললুম, পঞ্চু তোমাকে ফৌজদারি করতে হবে। পঞ্চু বললে, কেউ সাঙ্কি দেবে না। কেউ সাক্ষি দেবে না ? সন্দীপ ! সন্দীপ ! সন্দীপ তার ঘর থেকে বেরিয়ে এসে বললে, কী, ব্যাপারটা কী ? এই লোকটার কাপড়ের বস্তা ওর জমিদার তোমার সামনে পুড়িয়েছে, তুমি সাক্ষি দেবে না ? সদীপ হেসে বললে, দেব বই কি । কিন্তু আমি যে ওর জমিদারের পক্ষে সাক্ষি । আমি বললুম, সাক্ষি আবার জমিদারের পক্ষে কী । সাক্ষি তো সত্যের পক্ষে । - সন্দীপ বললে, যেটা ঘটেছে সেটাই বুঝি একমাত্র সত্য ? আমি জিজ্ঞাসা করলুম, অন্ত সত্যটা কী ? সন্দীপ বললে, যেট। ঘট দরকার । যে-সত্যকে আমাদের গড়ে তুলতে হবে, সেই সত্যের জন্যে অনেক মিথ্যে চাই, যেমন মায়া দিয়ে এই জগৎ গড়া হচ্ছে । পৃথিবীতে যারা স্থষ্টি করতে এসেছে তারা সত্যকে মানে না, তারা সত্যকে বানায় । स्य उठ७0दঅতএব তোমরা যাকে মিথ্যে সাক্ষি বল আমি সেই মিথ্যে সাক্ষি দেব । যারা রাজ্য বিস্তার করেছে, সাম্রাজ্য গড়েছে, সমাজ বেঁধেছে, ধর্মসম্প্রদায় স্থাপন করেছে, তারাই তোমাদের বাধা সত্যের আদালতে বুক ফুলিয়ে মিথ্যে সাক্ষি দিয়ে এসেছে। যারা শাসন করবে তারা মিথ্যেকে ডরায় না, যারা শাসন মানবে তাদের জন্তেই সত্যের লোহার শিকল । তোমরা কি ইতিহাস পড় নি ? তোমরা কি জান না, পৃথিবীর বড়ো বড়ো রান্নাঘরে যেখানে রাষ্ট্রষজ্ঞে পলিটিক্সের খিচুড়ি তৈরি হচ্ছে সেখানে মসলা গুলো সব মিথ্যে । জগতে অনেক খিচুড়ি পাকানো হয়েছে এখন— না গো, তোমরা খিচুড়ি পাকাবে কেন, তোমাদের টুটি চেপে ধরে খিচুড়ি গেলাবে । বঙ্গবিভাগ করবে, বলবে তোমাদের সুবিধের জন্তেই ; শিক্ষার দরজা * b বন্ধ করতে থাকবে, বলবে তোমাদেরই আদর্শ অতু্যচ্চ করে তোলবার সদভিপ্রায়ে ; তোমরা সাধু হয়ে অশ্রুপাত করতে থাকবে, আর আমরা অসাধু হয়ে