পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঘরে-বাইরে ese ই, কিন্তু থাকু সে-কাজ–আগে তোমার সঙ্গে— না তুমি কাজ সেরে এস—তার পরে তোমার খাওয়া হলে কথা হবে। বাইরে গিয়ে দেখি দারোগার পাত্র শূন্ত—সে ষাকে ধরে এনেছে সে তখনো বসে বসে পিঠে খাচ্ছে । o আমি আশ্চর্ষ হয়ে বললুম, এ কী, অমূল্য যে । সে এক-মুখ পিঠে নিয়ে বললে, আজ্ঞে ই—পেট ভরে খেয়ে নিয়েছি, এখন কিছু যদি না মনে করেন তা হলে ষে-কটা বাকি আছে রুমালে বেঁধে নিই।—বলে পিঠেগুলো সব রুমালে বঁধে নিলে । আমি দারোগার দিকে চেয়ে বললুম, ব্যাপারখানা কী। দারোগ হেসে বললে, মহারাজ, চোরের হেঁয়ালি তো হেঁয়ালিই রয়ে গেছে তার উপরে চোরাই মালের হেঁয়ালি নিয়ে মাথা ঘোরাচ্ছি । এই বলে একটা ছেড়া ন্যাকড়ার পুটুলি খুলে একতাড়া নোট সে আমার সামনে ধরলে । বললে, এই মহারাজের ছ-হাজার টাকা । কোথা থেকে বেরোল ? ஒ আপাতত অমূল্যবাবুর হাত থেকে । উনি কাল রাত্রে আপনার চকুয়া কাছারির নায়েবের কাছে গিয়ে বললেন, চোরাই নোট পাওয়া গেছে।—চুরি যেতে নায়েব এত ভয় পায় নি যেমন এই চোরাই মাল ফিরে পেয়ে । তার ভয় হল সবাই সন্দেহ করবে এ নোট সেই লুকিয়ে রেখেছিল এখন বিপদের সম্ভাবনা দেখে একটা অসম্ভব গল্প বানিয়ে তুলেছে। সে অমূল্যবাবুকে খাওয়াবার ছল করে বসিয়ে রেখেই থানায় খবর দিয়েছে। আমি ঘোড়ায় চড়ে গিয়েই ভোর থেকে ওঁকে নিয়ে পড়েছি। উনি বললেন, কোথা থেকে পেয়েছি সে আপনাকে বলব না। আমি বললুম, না বললে আপনি তো ছাড়া পাবেন না। উনি বলেন, মিথ্যে বলব। আমি বলি, আচ্ছা তাই বলুন। উনি বলেন, ঝোপের মধ্যে থেকে কুড়িয়ে পেয়েছি । আমি বললুম, মিথ্যে কথা অত সহজ নয়। কোথায় ঝোপ, সেই ঝোপের মধ্যে আপনি কী দরকারে গিয়েছিলেন সমস্ত বলা চাই। উনি বললেন, সে-সমস্ত বানিয়ে তোলবার আমি যথেষ্ট সময় পাব—সেজন্তে কিছু চিন্তা করবেন না। আমি বললুম, হরিচরণবাবু, ভদ্রলোকের ছেলেকে নিয়ে মিছিমিছি টানাটানি করে কী হৰে ।