পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য 8や《2 বাদ পড়ে ; অনেক বড়ো ছোটো হয়ে যায় ; অনেক ছোটো বড়ো হয়ে ওঠে ; কিন্তু তবু ম্যাপের চেয়ে তাকে সত্য মনে হয়, তাকে দেখবামাত্রই এক মুহুর্তে আমাদের সমস্ত চিত্ত তাকে চিনতে পারে। আমরা চোখে যে ভুল দেখি তাকে সংশোধন করতে গেলে ছবি হয় না, ম্যাপ হয়, তাকে মাথা খাটিয়ে আয়ত্ত করতে হয় । কিন্তু এইরকম আংশিক চেষ্টা ভারি শ্রাস্তিজনক । যাতে আমাদের সমস্ত প্রকৃতি উৎসাহের সঙ্গে যোগ দেয় না, পরস্পরের ভার লাঘব করে না, নিজ নিজ অংশ বণ্টন করে নেয় না, তাতে আমাদের তেমন পরিপুষ্ট সাধন হয় না। যে কারণে খনিজ পদার্থের চেয়ে প্রাণিজ পদার্থ আমরা শীঘ্র গ্রহণ এবং পরিপাক করতে পারি, সেই কারণে একেবারে অমিশ্র খাটি সত্য কঠিন যুক্তি আকারে আমাদের অধিকাংশ পাকযন্ত্রের পক্ষেই গুরুপাক । এইজন্য সত্যকে মানবের জীবনাংশের সঙ্গে মিশ্রিত করে দিলে সেটা লাগে ভালো । সেই কাজ করতে গেলেই প্রথমত একটা সত্যকে একদমে প্রথম থেকে শেষ পর্যস্ত আগাগোড়া দেওয়া যায় না । কারণ, অধিকাংশ সত্যই আমরা মনের মধ্যে আভাসরূপে পাই, এবং তার পশ্চাতে আমাদের মাথাটাকে প্রেরণ করে গড়ে পিটে তার একটা আগাগোড় খাড়া করে তুলতে চেষ্টা করি। সেটাকে বেশ একটা সংগত এবং সম্পূর্ণ আকার না দিলে একটা চলনসই প্রবন্ধ হল না মনে করি। এইজন্তে নানাবিধ কৃত্রিম কাঠখড় দিয়ে তাকে নিয়ে একটা বড়োগাছের তাল পাকিয়ে তুলতে হয় । আমি ইংরেজি কাগজ এবং বইগুলো যখন পড়ি তখন অধিকাংশ সময়েই আমার এই কথা মনে হয় ধে, একটা কথাকে একটা প্রবন্ধ কিংবা একটা গ্রন্থে পরিণত করতেই হবে এই চেষ্টা থাকাতে প্রতিদিনকার ইংরেজি সাহিত্যে যে কত বাজে বকুনির প্রাচুর্তাব হয়েছে তার আর সংখ্যা নেই—এবং সত্যটুকুকে খুঁজে বের করা কত দুঃসাধ্য হয়েছে। যে-কথাটা বলা হচ্ছে সেটা আসলে কত সহজ এবং সংক্ষিপ্ত, সেটাকে না-হক কত দুরূহ এবং বৃহৎ করে তোলা হয়। আমার বোধ হয় ইংরেজি সাহিত্যের মাপকাঠিটা বড়ো বেশি বেড়ে গেছে –তিন ভলুম না হলে নভেল হয় না এবং মাসিক পত্রের এক-একটা প্রবন্ধ দেখলে ভয় লাগে । আমার বোধ হয় নাইনটিন্থ সেনচুরি যদি অতবড়ে আয়তনের কাগজ না হত, তাহলে ওর লেখাগুলো ঢের বেশি পাঠ্য এবং খাটি হত । আমার তো মনে হয় বঙ্কিমবাবুর নভেলগুলি ঠিক নভেল যতবড়ো হওয়া উচিত তার আদর্শ । ভাগ্যে তিনি ইংরেজি নভেলিস্টের অন্থকরণে বাংলায় বৃহদায়তনের و به س- موb