পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী سOb &6 সাধারণ প্রকাশু স্থানে স্থানান্তরিত করিবার আন্দোলনে উদ্যোগীদের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ অন্ততম ছিলেন, এবং মহারাজ মণীন্দ্রচন্দ্র নন্দী যখন পরিষৎকে গৃহনির্মাণের জন্ত ভূমি দান করেন, তখন রবীন্দ্রনাথ পরিষদের পক্ষে অন্যতম স্তাসরক্ষক নির্বাচিত হইয়াছিলেন । কিছুকাল হইতে শ্ৰীযুক্ত অক্ষয়কুমার মৈত্র মহাশয় তাহার কোনো একটি প্রবন্ধে পাণিনির ব্যাকরণ প্রভৃতি হইতে প্রমাণ করিয়াছেন, ভারতবর্ষে প্রাচীনকালে পুত্রশদের অর্থ ছিল, যে পূর্ণ করে সেই পুত্র। পুংনামক কোনো একটি নরক হইতে ত্ৰাণ করে, এই ব্যাখ্যাটি পরবর্তীকালে আমাদের পুরাণে স্থান পাইয়াছে । পিতাকে সম্পূর্ণ করিয়া তুলে বলিয়াই পুত্রের গৌরব। পুত্র পিতার অকৃতকর্মগুলিকে সম্পন্ন করে, তাহার ভারকে বহন করে, তাহার ঋণকে পরিশোধ করিয়া দেয়। এই কারণেই কেবলমাত্র স্নেহপ্রবৃত্তির চরিতার্থতার জন্ত নহে, কল্যাণ প্রাপ্তির জন্ত, অকৃতার্থতা ও অসমাপ্তি হইতে মুক্তিলাভের জন্যই পুত্রকে আমাদের দেশে দেবতার বিশেষ প্রসাদলাভের মতোই গণ্য করিত। Mআমাদের দেশ বহুকাল হইতে পুত্রহীন হইয়া শোক করিতেছে। সে যাহা আরম্ভ করে তাহা কোনো একটি ব্যক্তিকেই আশ্রয় করিয়া দেখা দেয় এবং সেই একটি ব্যক্তির সঙ্গেই বিলীন হইয়া যায়—তাহার সংকল্পকে বিচিত্র সার্থকতার পরম্পরার মধ্য দিয়া ভাবী পরিণামের দিকে বহন করিয়া লইয়া যাইবার কোনো উপায় নাই । ক্ষুদ্রতা, বিচ্ছিন্নতা, অসমাপ্তি কেবলই দেশের ঋণের বোঝা বাড়াইয়াই চলিয়াছে, কোনোটাই পরিশোধ হইবার কোনো স্বলক্ষণ দেখা যাইতেছে না । এই সম্পূর্ণতাহীন থওতাশাপগ্ৰস্ত বন্ধ্যদশা ঘুচাইবার জন্য আমাদের অভাগ৷ দেশ কামনা করিতেছিল। কারণ, বন্ধ্যত্বমাত্রই বন্ধন । যে ব্যক্তি নিজের ফল ফলাইতে পারিল না সে নিস্কৃতি পাইল কই ? আমাদের দেশের অভ্যস্তরে যে অভিপ্রায় রাহয়াছে, সেই অভিপ্রায় যদি চারিদিকে সফলতার বিচিত্র রূপ ধারণ করিয়া উঠিতে না থাকে, যদি তাহা কেবল গুপ্তই থাকিয়া যায়, যদি তাহা অঙ্কুরিত হইয়াই শুকাইতে থাকে, তবে এমন কোনো কৃত্রিম উপায় নাই যাহার সাহায্যে দেশ মুক্তিলাভ করিতে পারিবে। Mর্বাহারা নিরন্তর কালের মধ্য দিয়া অবিচ্ছিন্নভাবে দেশের সংকল্পকে সিদ্ধির পথে যুক্তির পথে লইয়া যাইবে, তাহারাই দেশের পুত্র। দুঃখিনী বঙ্গভূমি সেই পুত্ৰ কামনা করিতেছিল N/