পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

888 রবীন্দ্র-রচনাবলী শ্ৰীশ । আপনি যদি বলেন। এখানে আমার অসময়ে অনধিকার প্রবেশ হয় নি, তা হলেই হল । অক্ষয় । তাই বললেম । তুমি যখনই আসবে তখনই সুসময়, এবং যেখানে পদার্পণ করবে। সেইখানেই তোমার অধিকার । শ্ৰীশবাবু, স্বয়ং বিধাতা সর্বত্র তোমাকে পাসপোর্ট দিয়ে রেখেছেন। একটু বোসো, অবলাকান্তবাবুকে খবর পাঠিয়ে দিই। (স্বগত) না পলায়ন করলে চিঠি শেষ করতে পারব না । [अंशन শ্ৰীশ । চক্ষের সম্মুখ দিয়ে এক জোড়া মায়াস্বর্ণমৃগী ছুটে পালালো। ওরে নিরস্ত্ৰ ব্যাধ, তোর ছোটবার ক্ষমতা নেই। নিকষের উপর সোনার রেখার মতো চকিত চোখের চাহনি দৃষ্টিপাথের উপরে যেন আঁকা রয়ে Car রসিকের প্রবেশ শ্ৰীশ । সন্ধেবেলায় এসে আপনাদের তো বিরক্ত করি নি রসিকবাবু ? রসিক । ভিক্ষুকক্ষে বিনিক্ষিপ্তঃ কিমিক্ষুনীরিসো ভবেৎ ? শ্ৰীশবাবু, আপনাকে দেখে বিরক্ত হব আমি केि ५eउदgों श्ऊङा । শ্ৰীশ । অবলাকান্তবাবু বাড়ি আছেন তো ? রসিক । আছেন বৈকি । এলেন বলে । শ্ৰীশ । না না, যদি কাজে থাকেন তা হলে তাকে ব্যস্ত করে কােজ নেই— আমি কুঁড়ে লোক, বেকার মানুষের সন্ধানে ঘুরে বেড়াই । রসিক । সংসারে সেরা লোকেরাই কুঁড়ে, এবং বেকার লোকেরাই ধন্য । উভয়ের সম্মিলন হলেই মণিকাঞ্চনযোগ । এই কুঁড়ে-বোকারের মিলনের জন্যেই তো সন্ধেবেলাটার সৃষ্টি হয়েছে। যোগীদের জন্যে সকালবেলা, রোগীদের জন্যে রাত্রি, কাজের লোকের জন্যে দশটা-চারটে । আর সন্ধেবেলাটা, সত্যি কথা বলছি, চিরকুমার-সভার অধিবেশনের জন্যে চতুরমুখ সৃজন করেন নি। কী বলেন শ্ৰীশবাবু। শ্ৰীশ । সে কথা মানতে হবে বৈকি। সন্ধ্যা চিরকুমার-সভার অনেক পূর্বেই সৃজন হয়েছে, সে আমাদের সভাপতি চন্দ্ৰবাবুর নিয়ম মানে না রসিক । সে যে-চন্দ্রের নিয়ম মানে, তার নিয়মই আলাদা । আপনার কাছে খুলে বলি, হাসবেন না শ্ৰীশবাবু, আমার এক তলার ঘরে কায়ক্লেশে একটি জানিলা দিয়ে অল্প একটু জ্যোৎস্না আসে ; শুক্লসন্ধ্যায় সেই জ্যোৎস্নার শুভ্ৰ রেখাটি যখন আমার বক্ষের উপর এসে পড়ে তখন মনে হয় কে আমার কাছে কী খবর পাঠালে গো । শুভ্র একটি হংসদূত কোন বিরহিণীর হয়ে এই চিরবিরহীর কানে কানে বলছে ဦါးမျိုးမျိုးမျိုးမျိုး* ং বাসন্তীনবপরিমালোদগার চিকুরাং । ত্বদুৎসঙ্গে লীনাং মদমুকুলিতাক্ষীং পুনরিম্যাং কদাহং সেবিষ্যে কিসলয়াকলাপব্যজনিনীমা ৷ শ্ৰীশ । বেশ বেশ রসিকবাবু, চমৎকার । কিন্তু ওর মানেটা বলে দিতে হবে । ছন্দের ভিতর দিয়ে ওর রসের গন্ধটা পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু অনুস্বার-বিসর্গ দিয়ে একেবারে ঐটে বদ্ধ করে রেখেছে। রসিক । বাংলায় একটা তৰ্জমাও করেছি ; পাছে সম্পাদকরা খবর পেয়ে হুড়াহুড়ি লাগিয়ে দেয়, তাই লুকিয়ে রেখেছি- শুনবেন শ্ৰীশবাবু ?-- কুঞ্জ কুটিরের স্নিগ্ধ অলিন্দের পর কালিন্দীকমলগন্ধ ছুটিবে সুন্দরলীনা রবে মদিরাকী তব অঙ্কতলে, বহিবে বাসন্তীবাস ব্যাকুল কুন্তলে । , তাহারে করিব সেবা, কবে হবে হয়, কিশলয়াপাখাখিনি দোলাইব গায় ?