পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষ বর্ষণ o > 8) নটরাজ। অবগুণ্ঠন তো খুলল। কিন্তু এ কী দেখলুম। এ কি রূপ, না বাণী ? এ কি আমার মনেরই মধ্যে, না আমার চোখেরই সামনে ? তোমার নাম জানিনে স্বর জানি। তুমি শরৎপ্রাতের আলোর বাণী । সারাবেল শিউলিবনে আছি মগন আপন মনে, কিসের ভুলে রেখে গেলে আমার বুকে ব্যধার বঁাশিখানি। আমি যা বলিতে চাই হল বল, ওই শিশিরে শিশিরে অশ্রগলা । আমি যা দেখিতে চাই প্রাণের মাঝে সেই মুরতি এই বিরাজে, ছায়াতে আলোতে আঁচল গাথা আমার আকারণ বেদনার বীণাপাণি । রাজা। শরৎই কাকে ইশারা করে ডাকছে ? বলে তো এবার কে আসবে ? নটরাজ। উনি ডাকছেন সুন্দরকে । যা ছিল ছায়ার কুঁড়ি তা ফুটল আলোর ফুলে। গানের ভিতর দিয়ে তাকিয়ে দেখুন। সুন্দরের প্রবেশ কার বঁাশি নিশিভোরে বাজিল মোর প্রাণে ? ফুটে দিগন্তে অরুণ-কিরণ-কলিকা । শরতের আলোতে মুন্দর আসে, ধরণীর আঁখি যে শিশিরে ভাসে হৃদয়কুঞ্জবনে মঙ্গরিল ш মধুর শেফালিকা । রাজা । নটরাজ, শরৎলক্ষ্মীর সহচরটি এরই মধ্যে চঞ্চল হয়ে উঠলেন কেন ? নটরাজ। শিশির গুকিয়ে যায়, শিউলি করে পড়ে, আশ্বিনের সাদা মেঘ আলোয় যায় মিলিয়ে। ক্ষণিকের অতিথি স্বর্গ থেকে মর্ত্যে আসেন। কাদিয়ে দিয়ে চলে যান। এই যাওয়াজাসায় স্বর্গমর্ত্যের মিলনপথ বিরহের ভিতর দিয়ে খুলে যায়। ।