পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পগুচ্ছ 史仓动 আছে এবং তাঁহারই সহিত দন্থাবশিষ্ট পাথুরে কয়ল। এবং ছাই দিন দিন রাণীকৃত হুইয়া উঠিতেছে। i i কিন্তু বাতায়নতলে শয়ন করিয়া এই বাগানের দিকে চাহিয়া হরমুন্দরী প্রতিমুহূর্তে ষে একটি আনন্দরস পান করিতে লাগিল, তাহার অকিঞ্চিৎকর জীবনে এমন সে আর কখনো করে নাই। গ্রীষ্মকালে স্রোতোবেগ মন্দ হইয়া ক্ষুদ্র গ্রাম্যনীটি যখন বালুশয্যার উপরে শীর্ণ হইয়া আসে তখন সে যেমন অত্যস্ত স্বচ্ছতা লাভ করে ; তখন যেমন প্রভাতের স্বর্যালোক তাহার তলদেশ পর্যন্ত কম্পিত হইতে থাকে, বায়ুম্পর্শ তাহার সর্বাঙ্গ পুলকিত করিয়া তোলে, এবং আকাশের তারা তাহার স্ফটিকদর্পণের উপর মুখস্থতির ন্যায় অতি সুস্পষ্টভাবে প্রতিবিম্বিত হয়, তেমনি হরসুন্দরীর ক্ষীণ জীবনতত্ত্বর উপর আনন্দময়ী প্রকৃতির প্রত্যেক অঙ্গুলি যেন স্পর্শ করিতে লাগিল এবং অস্তরের মধ্যে যে একটি সংগীত উঠিতে লাগিল তাহার ঠিক ভাবটি সে সম্পূর্ণ বুঝিতে পারিল না । এমন সময় তাহার স্বামী যখন পাশে বসিয়া জিজ্ঞাসা করিত 'কেমন আছ, তখন তাহার চোপে যেন জল উছলিয়া উঠিত। রোগশীর্ণ মুখে তাহার চোখ দুটি অত্যন্ত বড়ো দেখায়, সেই বড়ো বড়ো প্রেমার্জ সরুতজ্ঞ চোখ স্বামীর মুখের দিকে তুলিয়া শীর্ণহস্তে স্বামীর হস্ত ধরিয়া চুপ করিয়া পড়িয়া থাকিত, স্বামীর অস্তরেও যেন কোথা হইতে একটা নুতন অপরিচিত আনন্দরশ্মি প্রবেশ লাভ করিত। এই ভাবে কিছুদিন যায়। একদিন রাত্রে ভাঙা প্রাচীরের উপরিবর্তী খর্ব অশখগাছের কম্পমান শাখাস্তরাল হইতে একখানি বৃহৎ চাদ উঠিতেছে এবং সন্ধ্যাবেলাকার গুমট ভাঙিয়া হঠাৎ একটা নিশাচর বাতাস জাগ্রত হইয়া উঠিয়াছে, এমন সময় নিবারণের চুলের মধ্যে অঙ্গুলি বুলাইতে বুলাইতে হরমুন্দরী কহিল, “আমাদের তে ছেলেপুলে কিছুই হইল না, তুমি আর একটি বিবাহ করো।" হরমুন্দরী কিছুদিন হইতে এই কথা ভাবিতেছিল। মনে যখন একটা প্রবল আনন্দ, একটা বৃহৎ প্রেমের সঞ্চার হয় তখন মানুষ মনে করে আমি সব করিতে পারি। তখন হঠাৎ একটা আত্মবিসর্জনের ইচ্ছা বলবতী হইয়া উঠে। স্রোতের উচ্ছ্বাস যেমন কঠিন তটের উপর আপনাকে সবেগে মূৰ্ছিত করে, তেমনি প্রেমের আবেগ, আনন্দের উচ্ছ্বাস একটা মহৎ ত্যাগ একটা বৃহৎ দুঃখের উপর আপনাকে যেন নিক্ষেপ করিতে চাহে । o সেইরূপ অবস্থায় অত্যন্ত পুলকিত চিত্তে একদিন হরমুম্বী স্থির করিল, আমার স্বামীর জন্ত আমি খুব বড়ো একটা কিছু করিব। কিন্তু ছায়, যতখানি সাধ ততখানি