পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ቖbr Ε". রবীন্দ্র-রচনাবলী বিস্তারের বাধা এখানে মস্ত বেশি । নদী দেশের একধার দিয়া চলে, বৃষ্টি আকাশ জুড়িয়া হয়। তাই ফসলের সব চেয়ে বড়ো বন্ধু বৃষ্টি, নদী তার অনেক নীচে ; শুধু তাই নয়, এই বৃষ্টিধারার উপরেই নদীজলের গভীরতা, বেগ এবং স্থায়িত্ব নির্ভর করে। আমাদের দেশে যারা বজ্ৰহাতে ইন্দ্রপদে বসিয়া আছেন, তাদের সহস্রচক্ষু, কিন্তু বিষ্ঠার এই বর্ষণের বেলায় অন্ততঃ তার ৯৯•টা চক্ষু নিদ্রা দেয়। গর্জনের বেলায় অট্টহাস্তের বিদ্যুৎ বিকাশ করিয়া বলেন, বাবুগুলার বিদ্যা একটা অদ্ভুত জিনিস,—তার খোসার কাছে তলতল করে তার আঁঠির কাছে পাক ধরে না। যেন এটা বাবুসম্প্রদায়ের প্রকৃতিগত। কিন্তু বাবুদের বিদ্যাটাকে ষে প্রণালীতে জাগ দেওয়া হয় সেই প্রণালীতেই আমাদের উপরওয়ালাদের বিদ্যাটাকেও যদি পাকানোর চেষ্টা করা যাইত তবে বৈজ্ঞানিক উপায়ে প্রমাণ হইত যে, ষে-বিস্তার উপরে ব্যাপক শিক্ষার স্বর্যালোকের তা লাগে না তার এমনি দশাই হয়। o o জবাবে কেহ কেহ বলেন, পশ্চিম যখন পশ্চিমেই ছিল পূর্বদেশের ঘাড়ে আসিয়া পড়ে নাই তখন তোমাদের টোলে চতুষ্পাঠীতে ষে তর্কশাস্ত্রের প্যাচ কষা এবং ব্যাকরণস্বত্রের জাল বোন চলিত সেও তো অত্যস্ত কুনোরকমের বিদ্যা । একথা মানি, কিন্তু বিষ্ঠার যে অংশটা নির্জলা পাণ্ডিত্য সে অংশ সকল দেশেই পণ্ড এবং কুণো ; পশ্চিমেও পেভাষ্টি মরিতে চায় না। তবে কিনা যে দেশ দুর্গতিগ্রস্ত সেখানে বিষ্ঠার বল কমিয় গিয়া বিদ্যার কায়দাটাই বড়ো হইয় ওঠে। তবু একথা মানিতে হুইবে তখনকার দিনের পণ্ডিত্যটাই তর্কচষ্ণু ও ন্যায়পঞ্চাননদের মগজের কোণে কোণে বন্ধ ছিল বটে কিন্তু তখনকার কালের বিদ্যাটা সমাজের নাড়িতে নাড়িতে সজীব ও সবল হইয়া বছিত। কি গ্রামের নিরক্ষর চাষি, কি অন্তঃপুরের স্ত্রীলোক সকলেরই মন নানা উপায়ে এই বিস্কার সেচ পাইত। সুতরাং এ জিনিসের মধ্যে অন্ত অভাব অসম্পূর্ণত যাই থাক ইহা নিজের মধ্যে সুসংগত ছিল । يه{ কিন্তু আমাদের বিলাতি বিস্তাটা কেমন ইস্কুলের জিনিস হইয়া সাইনবোর্ডে টাঙানে থাকে, আমাদের জীবনের ভিতরের সামগ্ৰী হইয়া যায় না। তাই পশ্চিমের শিক্ষায় ধে ভালো জিনিস আছে তার অনেকখানি আমাদের নোটবুকেই আছে ; সে কি চিন্তায়, কি কাজে ফলিয়া উঠিতে চায় না । আমাদের দেশে আধুনিক পণ্ডিত বলেন, ইহার একমাত্র কারণ জিনিসটা বিদেশী। একথা মানি না। যা সত্য তার জিয়োগ্রাফি নাই। ভারতবর্বও একদিন ৰে সত্যের দীপ জালিয়াছে তা পশ্চিম মহাদেশকেও উজ্জল করিবে, এ যদি না হয় তবে ওট আলোই নয়। বস্তুত যদি এমন কোনো ভালো থাকে যা একমাত্র ভারতবর্ষেরই ভাগে