পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ঊনবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SW2 o রবীন্দ্র-রচনাবলী ভূপতি। খালীর হাতের কানমলা ? চন্দ্রকান্ত। হায় পোড়াকপাল! শুালী থাকলে তবু বিবাহের সংকীর্ণতা অনেকটা কাটে, ওরই মধ্যে একটুখানি পাশ ফেরবার জায়গা পাওয়া যায়– শ্বশুরমশায় একেবারে কড়ায় গণ্ডায় ওজন করে দিয়েছেন, সিকি পয়সার ফাউ দেন নি । বিনোদ । বাস্তবিক বর পছন্দ করবার সময় যেমন জিজ্ঞাসা করে কটি পাস আছে, কনে পছন্দ করবার সময় তেমনি খোজ নেওয়া উচিত কটি ভগিনী আছে। চন্দ্রকান্ত। চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে। ঠিক বিয়ের দিনটিতে বুঝি চৈতন্য হল ? নিতান্ত বঞ্চিত হবে না ; তোমার কপালে একটি আছে, নামটি হচ্ছে ইন্দুমতী । গদাই । ( স্বগত) র্যাকে আমার স্কন্ধের উপর উদ্যত করা হয়েছে— সর্বনাশ আর-কি । শ্ৰীপতি। বিনোদ, একটুখানি বোসে । বিনোদ । না ভাই, তা হলে আর উঠতে পারব না, মনটা দেহের উপর যেন পাথরের কাগজচাপা হয়ে চেপে রাখবে। ভূপতি । এসে তবে, বর কনের উদ্দেশে খী, চিয়ারস দিয়ে বেরিয়ে পড়া যাক । হিপ, হিপ হুরে— চন্দ্রকান্ত। দেখো, আমার প্ৰিয়বন্ধুর বিয়েতে আমি কখনোই এরকম অনাচার হতে দেব না ; শুভকৰ্মে আমন বিদেশী শেয়াল-ডাক ডেকো না । তার চেয়ে সবাই মিলে উলু দেবার চেষ্টা করো-না ! নলিনাক্ষ । এই তবে আমাদের অবিবাহিত বন্ধুত্বের শেষ মিলন। জীবনস্রোতে তুমি এক দিকে যাবে, আমি এক দিকে যাব। প্রার্থনা করি তুমি মুখে থাকে। কিন্তু মুহূর্তের জন্যে ভেবে দেখো বিহু, এই মরুময় জগতে তুমি কোথায় যাচ্ছ— চন্দ্রকান্ত । বিহু, তুই বল, মা, আমি তোমার জন্যে দাসী আনতে যাচ্ছি। তা হলে কনকাঞ্জলিট হয়ে যায় । শ্ৰীপতি। এইবার তবে উলু আরম্ভ হোক । সকলে উলুর চেষ্টা ও প্রস্থান ইন্দু ও ক্ষান্তমণির প্রবেশ ক্ষান্তমণি। শুনলি তো ভাই, আমার কর্তাটির মধুর কথাগুলি ? ইন্দু। কেন ভাই, আমার তো মন্দ লাগে নি। ক্ষান্তমণি । তোর মন্দ লাগবে কেন ? তোর তো আর বাজে নি। যার বেজেছে সেই জানে—