পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ঊনবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষরক্ষা >や〉 ইন্দু। তুমি যে একেবারে ঠাটা সইতে পার না । তোমার স্বামী কিন্তু ভাই তোমাকে সত্যি ভালোবাসে। দিনকতক বাপের বাড়ি গিয়ে বরং পরীক্ষা করে দেখো-না— ক্ষস্তিমণি । তাই একবার ইচ্ছা করে, কিন্তু জানি থাকতে পারব না। তা যা হোক, এখন তোদের ওখানে যাই । ওরা তো বউবাজারের রাস্তা ঘুরে যাবে, সে এখনো ঢের দেরি আছে । ইন্দু। তুমি এগোও ভাই, তোমার স্বামীর এই বইগুলি গুছিয়ে দিয়ে যাই। [ ক্ষণস্তর প্রস্থান ললিতবাবু তার এই খাতাটা ফেলে গেছেন । এটা না দেখে আমি যাচ্ছি নে । ( খাতা খুলিয়া ) ওমা ! এ যে কবিতা । কাদম্বিনীর প্রতি। আ মরণ। সে পোড়ারমুথি আবার কে । জল দিবে অথবা বজ্র, ওগো কাদম্বিনী, হতভাগ্য চাতক তাই ভাবিছে দিনরজনী । ভারি যে অবস্থা খারাপ ! জল ও না, বজ্র ও না, হতভাগ্য চাতকের জন্যে কবিরাজের তেলের দরকার । আর কিছু দা ও বা না-দাও, অয়ি অবলে সরলে, বঁচি সেই হাসি ভরা মুখ আর-একবার দেখিলে। আহাহাহা ! অবলে সরলে । পুরুষগুলো ভারি বোকা । মনে করলে, ওঁর প্রতি ভারি অনুগ্রহ করে সে হেসে গেল । হাসতে না কি সিকি পয়সা খরচ হয়। কই আমাদের কাছে তো কোনো কাদম্বিনী সাত পুরুষে এমন করে হাসতে আসে না ! অবলে সরলে ! সত্যি বাপু, মেয়ে জাতটাই ভালো নয়। এত ছলও জানে। ছিছি ! এ কবিতাও তেমনি। আমি যদি কাদম্বিনী হতুম তো এমন পুরুষের মুখ দেখতুম না । ষে লোক চোদটা অক্ষর সামলে চলতে পারে না তার সঙ্গে আবার প্রণয় ! এ খাতা আমি ছিড়ে ফেলব ; পৃথিবীর একটা উপকার করব ; কাদম্বিনীর দেমাক বাড়তে দেব না। পুরুষের বেশে হরিলে পুরুষের মন, এবার নারীবেশে কেড়ে নিয়ে যাও জীবন মরণ । এর মানে কী ! কদম্ব যেমনি আমা প্রথম দেখিলে, কেমন করে ভূত্য বলে তখনি চিনিলে । ওমা! ওমা! ওমা! এ যে আমারই কথা। এইবার বুঝেছি, পোড়ারমুখি