পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

US: রবীন্দ্র-রচনাবলী অথবা— দিগ বলয়ে নবশশিলেখা টুকরো যেন মানিকের রেখা । এতেও কর্ণনের সন্মতি আছে । দিকপ্রাস্তে ওই চাদ বুঝি দিক্‌-ভ্রান্ত মরে পথ খুজি । আপত্তির বিশেষ কারণ নেই।

  • দিক্ৰপ্রান্তের ধূমকেতু উন্মত্তের প্রলাপের মতো

নক্ষত্রের আঙিনায় টলিয়া পড়িল অসংগত । এও চলে। একের নজিরে অন্যের প্রামাণ্য ঘোচে না । কিন্তু যারা এ নিয়ে আলোচনা করছেন তারা একটা কথা বোধ হয় সম্পূর্ণ মনে রাখছেন না যে, সব দৃষ্টান্তগুলিই পয়ারজাতীয় ছন্দের। আর এ কথা বলাই বাহুল্য যে, এই ছন্দ যুক্তধ্বনি ও অযুক্তধ্বনি উভয়কেই বিনা পক্ষপাতে এক মাত্রারূপে ব্যবহার করবার সনাতন অধিকার পেয়েছে। আবার যুক্তধ্বনিকে দুই ভাগে বিশ্লিষ্ট করে তাকে দুই মাত্রায় ব্যবহার করার স্বাধীনতা সে যে দাবি করতে পারে না তাও নয় । যাকে আমি অসম বা বিষম মাত্রার ছন্দ বলি যুক্তধ্বনির বাছ-বিচার তাদেরই এলেকায় | হৃৎ-ঘটে স্বধারস ভরি কিম্বা-— হৃৎ-ঘটে অমৃতরস ভরি তৃষা মোর হরিলে সুন্দরী । এ ছন্দে দুইই চলবে । কিন্তু—

  • অমৃতনিঝরে হৃৎপাত্রটি ভরি

কারে সমর্পণ করিলে স্কুন্দরী। অগ্রাহ, অন্তত আধুনিক কালের কানে। অসম মাত্রার ছলে এরকম যুক্তধ্বনির বন্ধুরতা আবার একদিন ফিরে আসতেও পারে, কিন্তু আজ এটার চল নেই। এই উপলক্ষে একটা কথা বলে রাখি, সেটা আইনের কথা নয়, কানের অভিরুচির কথা ।