পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ডাকঘর \లివె মোড়লের প্রবেশ মোড়ল । কে রে । রাস্তার মধ্যে আমাকে ডাকাডাকি করে ! কোথাকার বাদর এটা ! অমল । তুমি মোড়লমশায়, তোমাকে তো সবাই মানে। মোড়ল । ( খুশি হইয়া) হা, হা, মানে বৈকি। খুব মানে। অমল । রাজার ডাক-হরকরা তোমার কথা শোনে ? মোড়ল। ন শুনে তার প্রাণ বঁাচে ? বাস রে, সাধ্য কী ! অমল। তুমি ডাক-হরকরাকে বলে দেবে আমারই নাম অমল— আমি এই জানলার কাছটাতে বসে থাকি । মোড়ল । কেন বলো দেখি । অমল । আমার নামে যদি চিঠি আসে— মোড়ল । তোমার নামে চিঠি ! তোমাকে কে চিঠি লিখবে ? অমল । রাজা যদি চিঠি লেখে তা হলে— মোড়ল । হা হা হা হা ! এ ছেলেটা তো কম নয়। হা হা হা হা ! রাজা তোমাকে চিঠি লিখবে! তা লিখবে বৈকি! তুমি যে তার পরম বন্ধু! কদিন তোমার সঙ্গে দেখা না হয়ে রাজা শুকিয়ে যাচ্ছে, খবর পেয়েছি । আর বেশি দেরি নেই, চিঠি হয়তো আজই আসে কি কালই আসে । অমল। মোড়লমশায়, তুমি অমন করে কথা কচ্ছ কেন ! তুমি কি আমার উপর রাগ করেছ ? মোড়ল । বাস রে । তোমার উপর রাগ করব ! এত সাহস আমার ! রাজার সঙ্গে তোমার চিঠি চলে – মাধব দত্তের বড়ো বাড় হয়েছে দেখছি। দু-পয়সা জমিয়েছে কিনা, এখন তার ঘরে রাজা-বাদশার কথা ছাড়া আর কথা নেই। রোসোন। ওকে মজা দেখাচ্ছি। ওরে ছোড়া, বেশ, শীঘ্রই যাতে রাজার চিঠি তোদের বাড়িতে আসে, আমি তার বন্দোবস্ত করছি । অমল । না, না, তোমাকে কিছু করতে হবে না। মোড়ল । কেন রে ? তোর খবর আমি রাজাকে জানিয়ে দেব— তিনি তা হলে আর দেরি করতে পারবেন না— তোমাদের খবর নেওয়ার জন্যে এখনই পাইক পাঠিয়ে দেবেন – না, মাধব দত্তর ভারি আস্পর্ধা— রাজার কানে একবার উঠলে দুরন্ত হয়ে যাবে। [ প্রস্থান অমল। কে তুমি মল ঝম্ ঝম্ করতে করতে চলেছ— একটু দাড়াও না ভাই।