পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

झहै বোন 85ፋ সংসারে অনটন নেই তা নয়, বাপের বাড়ির চালচলন এখানেও বজায় আছে । তার কারণ, এই পারিবারিক স্বৈরাজ্যে ব্যবস্থাবিধি শৰ্মিলার অধিকারে। ওঁর সস্তান হয় নি, হবার আশাও বোধ করি ছেড়েছে। স্বামীর সমস্ত উপার্জন অখণ্ডভাবে এসে পড়ে ওরই হাতে। বিশেষ প্রয়োজন ঘটলে ঘরের অন্নপূর্ণার কাছে ফিরে ভিক্ষ না মেগে শশাঙ্কর উপায় নেই। দাবি অসংগত হলে নামঞ্জুর হয়, মেনে নেয় মাথা চুলকিয়ে। অপর কোনো দিক থেকে নৈরাশ্বট পূরণ হয় মধুর রসে। শশাঙ্ক বললে, "চাকরি ছেড়ে দেওয়া আমার পক্ষে কিছুই নয়। তোমার জন্তে ভাবি, কষ্ট হবে তোমারই ।” শৰ্মিলা বললে, “তার চেয়ে কষ্ট হবে যখন অন্তায়টাকে গিলতে গিয়ে গলায় বাধবে ।” শশাঙ্ক বললে, “কাজ তো করা চাই, ধ্রুবকে ছেড়ে অধ্রুবকে খুজে বেড়াব কোন পাড়ায় ? “সে-পাড়া তোমার চোখে পড়ে না। তুমি যাকে ঠাট্টা করে বল তোমার চাকরির লুচি-স্থান, বেলুচিস্থান মরুপ্রদেশের ও পারে, তার বাইরের বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে তুমি গণ্যই কর না।”

  • সর্বনাশ । সে বিশ্বব্রহ্মাও যে মস্ত প্রকাও ৷ রাস্তাঘাট সার্ভে করতে বেরোবে কে। অতবড়ো দুরবীন পাই কোন বাজারে।”

“মস্ত দুরবীন তোমাকে কষতে হবে না। আমার জ্ঞাতিসম্পর্কের মথুরদাদা কলকাতায় বড়ো কনট্রাক্টর, তার সঙ্গে ভাগে কাজ করলে দিন চলে যাবে।” “ভাগটা ওজনে অসমান হবে । এ পক্ষে বাটখারায় কমতি । খুড়িয়ে শরিকি করতে গেলে পদমর্যাদা থাকবে না ।” "এ পক্ষে কোনো অংশেই কমতি নেই। তুমি জানে, বাবা আমার নামে ব্যাঙ্কে যে টাকা রেখে গেছেন স্বদে বাড়ছে । শরিকের কাছে তোমাকে খাটো হতে হবে मां ।”

  • সে কি হয়। ও টাকা যে তোমার।” বলে শশাঙ্ক উঠে পড়ল । বাইরে লোক বসে আছে ।

শৰ্মিলা স্বামীর কাপড় টেনে বসিয়ে বললে, “আমিও যে তোমারই ।” তার পর বললে, “বের করে তোমার জেব থেকে ফাউন্টেনপেন, এই নাও চিঠির কাগজ, লেখো রেজিগ নেশন-পত্র। সেটা ডাকে রওনা না করে আমার শাস্তি নেই।”

  • আমারও শাস্তি নেই বোধ হচ্ছে।” লিখলে রেজিগ নেশন-পত্র।

3-Ֆ չկՀ Պ