পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (একাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

89e রবীন্দ্র-রচনাবলী শশাঙ্ক কোনোরকম হাতুড়েদের সহ করতে পারত না । সে আপত্তি করলে । শৰ্মিলা বললে, “আর কোনো ফল হবে না, অন্তত মামা সাত্বনা পাবেন ।” দেখতে দেখতে ফল হল । নিশ্বাসের কষ্ট কমেছে, রক্ত ওঠা গেল বন্ধ হয়ে । সাত দিন যায়, পনেরো দিন যায়, শর্মিল উঠে বসল। ডাক্তার বললে, মৃত্যুর ধাক্কাতেই অনেক সময় শরীর মরিয়া হয়ে উঠে শেষ ঠেলায় আপনাকে আপনি বাচিয়ে তোলে । শৰ্মিলা বেঁচে উঠল । তখন সে ভাবতে লাগল, “এ কী আপদ! কী করি ! শেষকালে বেঁচে ওঠাই কি মরার বাড়া হয়ে দাড়াবে।’ ও দিকে উমি জিনিসপত্র গোছাচ্ছে । এখানে তার পালা শেষ হল। দিদি এসে বললে, “তুই যেতে পারবি নে ৷” *সে কী কথা।” t “হিন্দুসমাজে বোন-সতিনের ঘর কি কোনো মেয়ে কোনো দিন করে নি।” *द्धिः ।” “লোকনিন্দ । বিধির বিধানের চেয়ে বড়ো হবে লোকের মুখের কথা ।” শশাঙ্ককে ডাকিয়ে বললে, “চলে আমরা যাই নেপালে। সেখানে রাজ-দরবারে তোমার কাজ পাবার কথা হয়েছিল— চেষ্টা করলেই পাবে। সে দেশে কোনো কথা উঠবে না।” শৰ্মিল কাউকে দ্বিধা করবার অবকাশ দিল না। যাবার আয়োজন চলছে । উমি তবু বিমৰ্ষ হয়ে কোণে কোণে লুকিয়ে বেড়ায় । শশাঙ্ক তাকে বললে, “আজ যদি তুমি আমাকে ছেড়ে যাও তা হলে কী দশ হবে ভেবে দেখো ।” উমি বললে, “আমি কিছু ভাবতে পারি নে। তোমরা দুজনে যা ঠিক করবে তাই হবে।” গুছিয়ে নিতে কিছু দিন লাগল। তার পর সময় যখন কাছে এসেছে উমি বললে, “জার দিন-সাতেক অপেক্ষা করে, কাকাবাবুর সঙ্গে কাজের কথা শেষ করে আসি গে।” 攜 চলে গেল উমি ।