পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२8० রবীন্দ্র-রচনাবলী বলিল, “রসিকদা, তোমার তো মার সঙ্গে কাশী গেলে চলবে না। আমরা যে চিরকুমার-সভার সভ্য হব— আবেদনপত্রের সঙ্গে প্রবেশিকার দশটা টাকা দিয়ে বসে আছি।” } অক্ষয় কহিলেন, “মার সঙ্গে কাশী যাবার জন্যে আমি লোক ঠিক করে দেব এখন, সে-জন্তে ভাবনা নেই।” শৈল। এই-যে মুখুজোমশায়। তুমি তাদের কি বানর বানিয়েই ছেড়ে দিলে! শেষকালে বেচারীদের জন্যে আমার মায়া করছিল । অক্ষয় । বানর কেউ বানাতে পারে না শৈল, ওটা পরম প্রকৃতি নিজেই বানিয়ে রাখেন। ভগবানের বিশেষ অনুগ্রহ থাক চাই। যেমন কবি হওয়া আর-কি। লেজই বল কবিত্বই বল ভিতরে না থাকলে জোর করে টেনে বের করবার জো নেই! পুরবালা প্রবেশ করিয়া কেরোসিন ল্যাম্পটা লইয়া নাড়িয়া চাড়িয়া কহিল, “বেহার কী রকম আলো দিয়ে গেছে, মিট্‌মিটু করছে। ওকে বলে বলে পার গেল না ।” অক্ষয় । সে বেটা জানে কিনা অন্ধকারেই আমাকে বেশি মানায় । পুরবালা। আলোতে মানায় না ? বিনয় হচ্ছে না কি ? এটা তো নতুন দেখছি। অক্ষয়। আমি বলছিলুম, বেহার বেট চাদ বলে আমাকে সন্দেহ করেছে। পুরবালা। ওঃ, তাই ভালো। তা, ওর মাইনে বাড়িয়ে দাও!— কিন্তু রসিকদাদা, অাজ কী কাগুটাই করলে । রসিক। ভাই, বর ঢের পাওয়া যায়, কিন্তু সবাই বিবাহযোগ্য হয় না— সেইটের একটা সামান্ত উদাহরণ দিয়ে গেলুম। পুরবালা। সে উদাহরণ না দেখিয়ে দুটো-একটা বিবাহযোগ্য বরের উদাহরণ দেখালেই তো ভালো হত। t শৈল । সে ভার আমি নিয়েছি দিদি । পুরবাল । তা আমি বুঝেছি। তুমি আর তোমার মুখুজ্যেমশায় মিলে ক-দিন ধরে যে-রকম পরামর্শ চলছে, একটা কী কাও হবেই। অক্ষয় । কিষ্কিন্ধ্যাকাও তো আজ হয়ে গেল । রসিক । লঙ্কাকাণ্ডের আয়োজনও হচ্ছে, চিরকুমার-সভার স্বর্ণলঙ্কায় আগুন লাগাতে চলেছি । পুরবালা । শৈল তার মধ্যে কে ? রসিক। হকুমান তো নয়ই।