পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨ઉ ૭ রবীন্দ্র-রচনাবলী পঞ্চম পরিচ্ছেদ অক্ষয় বলিলেন, “স্বামীই স্ত্রীর একমাত্র তীর্থ। মান কি না ?” পুরবালা। আমি কী পণ্ডিতমশায়ের কাছে শাস্ত্রের বিধান নিতে এসেছি ? আমি মার সঙ্গে আজ কাশী চলেছি এই খবরটি দিয়ে গেলুম। অক্ষয় । খবরটি মুখবর নয়—- শোনবামাত্র তোমাকে শাল-দোশালা বকশিশ দিয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে না। 空 পুরবালা । ইস, হৃদয় বিদীর্ণ হচ্ছে— না ? সহ করতে পারছ না ? অক্ষয়। আমি কেবল উপস্থিত বিচ্ছেদের কথা ভাবছিনে— এখন তুমি দু দিন না রইলে, আরও কজন রয়েছেন, এক রকম করে এই হতভাগ্যের চলে যাবে। কিন্তু এর পরে কী হবে ? দেখো, ধর্মকর্মে স্বামীকে এগিয়ে যেয়ে না--স্বর্গে তুমি যখন ডবল প্রোমোশন পেতে থাকবে আমি তখন পিছিয়ে থাকব— তোমাকে বিষ্ণুদূতে রথে চড়িয়ে নিয়ে যাবে, আর আমাকে যমদূতে কানে ধরে হটিয়ে দৌড় করাবে— গান। পরজ স্বর্গে তোমায় নিয়ে যাবে উড়িয়ে, পিছে পিছে আমি চলব খুড়িয়ে। ইচ্ছা হবে টিকির ডগা ধরে বিষ্ণুদূতের মাথাটা দিই গুড়িয়ে । পুরবালা । আচ্ছা, আচ্ছা, থামো । . . অক্ষয়। আমি থামব, কেবল তুমিই চলবে। উনবিংশ শতাব্দীর এই বন্দোবস্ত ?— নিতাস্তই চললে ? পুরবালা। চললুম। অক্ষয় । আমাকে কার হাতে সমর্পণ করে গেলে ? পুরবালা। রসিকদাদার হাতে । অক্ষয়। মেয়েমানুষ, হস্তান্তর করবার আইন কিছুই জান না। সেই জন্তেই তো বিরহাবস্থায় উপযুক্ত হাত নিজেই খুজে নিয়ে আত্মসমর্পণ করতে হয়। পুরবালা। তোমাকে তো বেশি খোজাখুঁজি করতে হবে না। অক্ষয় । তা হবে না ।