পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রজাপতির নির্বন্ধ $ፃፃ অশ্বিনীকুমারযুগল, আমাদের দুটি বোনকে এক বোটার দুটি ফুলের মতো তোমরা একসঙ্গে গ্রহণ করো। বিরহসম্ভাবনার উল্লেখমাত্রে দুটি ভগিনী পরম্পরকে জড়াইয়া ধরিল এবং নৃপ কোনোমতে চোখের জল সামলাইতে পারিল না। নৃপবালা । আচ্ছা নীরু, মেজদিদিকে কেমন করে ছেড়ে যাবি বল দেখি। আমরা দুজনে গেলে ওঁর আর কে থাকবে ? নীরবালা । সে কথা অনেক ভেবেছি । থাকতে যদি দেন তা হলে কি ছেড়ে যাই ? ভাই, ওঁর তো স্বামী নেই, আমাদেরও নাহয় স্বামী না রইল। মেজদিদির চেয়ে বেশি মুখে আমাদের দরকার কী ? পুরুষবেশধারিণী শৈলবালার প্রবেশ নীরু টেবিলের উপরিস্থিত থালা হইতে একটি ফুলের মালা তুলিয়া লইল শৈলবালার গলায় পরাইয়া কহিল, “আমরা দুই স্বয়ম্বর তোমাকে আমাদের পতিরূপে বরণ করলুম।” এই বলিয়া শৈলবালাকে প্রণাম করিল। শৈল । ও আবার কী ? নীরবালা। ভয় নেই ভাই, আমরা দুই সতীনে তোমাকে নিয়ে ঝগড়া করব না। যদি করি, সেজদিদি আমার সঙ্গে পারবে না— আমি একলাই মিটিয়ে নিতে পারব, তোমাকে কষ্ট পেতে হবে না। না, সত্যি বলছি মেজদিদি, তোমার কাছে আমরা যেমন আদরে আছি এমন আদর কি কোথাও পাব ? কেন তবে আমাদের পরের গলায় দিতে চাস ? পুনর্বার নৃপর দুই চক্ষু বাহিয়া ব্যর ঝর করিয়া জল পড়িতে লাগিল। “ও কী ও নৃপ, ছি” বলিয়া শৈল তাহার চোখ মুছিয়া দিল ; কহিল, “তোদের কিসে মুখ তা কি তোরা জানিস ? আমাকে নিয়ে যদি তোদের জীবন সার্থক হত তা হলে কি আমি জার কারও হাতে তোদের দিতে পারতুম ?” তিন জনে মিলিয়া একটা অশ্লবর্ষণকাও ঘটবার উপক্ৰম করিতেছিল এমন সময়ে রসিকদাদ প্রবেশ করিয়া কাতরস্বরে কহিলেন, “ভাই, আমার মতো অসত্যটাকে তোরা সভ্য করলি— আজ তো সভা এখানে বসবে, কিরকম ভাবে চলৰ শিখিয়ে দে।" % নীর কছিল, “ফের পুরোনো ঠাট্ট ? — তোমার ঐ মৃত্য-অসভ্যুর কথাটা এই