পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রজাপতির নির্বন্ধ '©8ማ পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ জগত্তারিণী। বাবা অক্ষয় । দেখো তো, মেয়েদের নিয়ে আমি কী করি। নেপ বসে বলে কাদছে, নীর রেগে অস্থির, সে বলে সে কোনোমতেই বেরোবে না। ভদ্রলোকের ছেলেরা আজ এখনি আসবে, তাদের এখন কী বলে ফেরাব । তুমিই বাপু, ওদের শিখিয়ে পড়িয়ে বিবি করে তুলেছ, এখন তুমিই ওদের সামলাও । পুরবালা । সত্যি, আমি ওদের রকম দেখে অবাক হয়ে গেছি, ওরা কি মনে করেছে ওরা— অক্ষয়। বোধ হয় আমাকে ছাড়া আর কাউকে ওরা পছন্দ করছে না ; তোমারই সহোদর। কিনা, রুচিটা তোমারই মতে । পুরবাল । ঠাট্ট রাখে, এখন ঠাট্টার সময় নয়— তুমি ওদের একটু বুঝিয়ে বলবে কিনা বলে । তুমি না বললে ওরা শুনবে না। অক্ষয় । এত অতুগত ! একেই বলে ভগ্নীপতিব্ৰতা শু্যালী । আচ্ছা, আমার কাছে একবার পাঠিয়ে দাও-– দেখি । [ জগত্তারিণী ও পুরবালার প্রস্থান নৃপবালা ও নীরবালার প্রবেশ নীরবালা । না, মুখুজোমশায়, সে কোনোমতেই হবে না। নৃপবালা । মুখুজোমশায়, তোমার দুটি পায়ে পড়ি আমাদের যার তার সামনে ওরকম করে বের কোরো না । অক্ষয় । ফাসির হুকুম হলে একজন বলেছিল, আমাকে বেশি উচুতে চড়িয়ে না, আমার মাথাঘোরা ব্যামো আছে– তোদের যে তাই হল । বিয়ে করতে যাচ্ছিস, এখন দেখা দিতে লজ্জা করলে চলবে কেন ? নীরবাল । কে বললে আমরা বিয়ে করতে ষাচ্ছি ? অক্ষয়। অহো, শরীরে পুলক সঞ্চার হচ্ছে । কিন্তু হৃদয় দুর্বল এবং দৈব বলবান, যদি দৈবাৎ প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করতে হয়— l নীরবালা । না, ভঙ্গ হবে না । অক্ষয়। হবে না তো ? তবে নিৰ্ভয়ে এস ; যুবক দুটোকে দেখা দিয়ে অাধপোড়া করে ছেড়ে দাও— হতভাগার বাসায় ফিরে গিয়ে মরে থাকুক। নীয়বালা । অকারণে প্রাহিত্য করবার জন্তে আমাদের এত উৎসাহ নেই। 3३8