পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ひや " রবীন্দ্র-রচনাবলী দ্বিতীয়। চল চল, ঐ আসছেন। 通 প্রথম। ঐ-যে সঙ্গে ওঁর মামাতো ভাই ধুরন্ধরটিও আছেন- শনির সঙ্গে মঙ্গল এসে জুটেছেন। - ' রাজধর ও ধুরন্ধর রাজধর । অসহ্য হয়েছে । 暗 ধুরন্ধর । কিন্তু সহ্য করতেও তো কসুর নেই। ইন্দ্ৰকুমারের সঙ্গে তো প্রায় জন্মাবধিই এইরকম চলছে, কিন্তু অসহ্য হয়েছে এমন তো লক্ষণ দেখি নে । রাজধার। লক্ষণ দেখিয়ে লাভ হবে কী ! যখন দেখাব একেবারে কাজে দেখােব। একটা সুযোগ এসেছে। এইবার অস্ত্রপরীক্ষায় আমি লক্ষ্যভেদ করব । ধুরন্ধর । ইন্দ্ৰকুমারের বক্ষে নাকি ? রাজধর। বক্ষে নয়, তার হৃদয়ে। এবারকার পরীক্ষায় আমি জিতবা, ওঁর অহংকারটাকে বিধে dशg grig कलब । ধুরন্ধর । অন্ত্রপরীক্ষায় ইন্দ্ৰকুমারকে জিতবে এইটােকেই সুযোগ বলছ ? রাজধর। সুযোগ কি তীরের মুখে থাকে ? সুযোগ বুদ্ধির ডগায়। তোমাকে কিন্তু একটি কাজ করতে হবে । ধুরন্ধর । কাজ তো তোমার বরাবরই করে আসছি, ফল তো কিছু পাই নে। ] রাজধর । ফল সবুরে পাওয়া যায়। কোনোরকম ফন্দিতে ইন্দ্ৰকুমার-দাদার অন্ত্রশালায় ঢুকে ঠার তুণের প্রথম খোপটি থেকে তঁর নাম-লেখা তীরটি তুলে নিয়ে আমার নাম-লেখা তীর বসিয়ে আসতে হবে। তার সঙ্গে আমার তীর বদল করতে হবে, ভাগ্যও বদল হবে। ধুরন্ধর। সবই যেন বুঝলুম কিন্তু আমার প্রাণটি ? সেটি গেলে তো কারও সঙ্গে বদল চলবে না। রাজধর । তোমার কোনো ভয় নেই, আমি আছি । ধুরন্ধর । তুমি তো বরাবরই আছ, কিন্তু ভয়ও আছে। সেই যখন ইন্দ্ৰকুমারের রুপোর-পাত-দেওয়া ধনুকটার উপরে তুমি লোভ করলে আমিই তো সেটি সংগ্রহ করে তোমার ঘরে এনে লুকিয়ে রেখেছিলুম। শেষকালে যখন ধরা পড়লে ইন্দ্ৰকুমার ঘূণা করে সে ধনুকটা তোমাকে দান করলেন, কিন্তু আমার যে অপমানটা করলেন সে আমার জীবন গেলেও যাবে না। তখন তো ভাই, তুমি ছিলে, রক্ষা যত করেছিলে সে আমার মনে আছে । রাজধর । এবার তোমার সময় এসেছে, সেই অপমানের শোধ দেবার জোগাড় করো। ধুরন্ধর । সময় কখন কার আসে সেটা যে পরিষ্কার বোঝা যায় না। দুর্বল লোকের পক্ষে অপমান পরিপাক করবার শক্তিটাই ভালো ; শোধ তোলবার শখটা তার পক্ষে নিরাপদ নয়। ঐ-যে ওঁরা সব আসছেন। আমি পলাই। তোমার সঙ্গে আমাকে একত্রে দেখলেই ইন্দ্ৰকুমার যে কথাগুলি বলবেন তাতে মধুবর্ষণ করবে না, আর ইশা খাও যে তোমার চেয়ে আমার প্রতি বেশি ভালোবাসা প্রকাশ করবেন এমন ভরসা আমার নেই। [প্ৰস্থান ইন্দ্ৰকুমারের অন্ত্রশালার দ্বারে ইন্দ্ৰকুমার। কী হে প্ৰতাপ, ব্যাপারখানা কী ? আমাকে হঠাৎ অস্ত্রশালার দ্বারে যে ডাক পড়ল ? প্রতাপ। মধ্যম বউরানীমা আপনাকে খবর দিতে বললেন যে, আপনার অন্ত্রশালার মধ্যে একটি জ্যান্ত অস্ত্র ঢুকেছেন, তিনি বায়ু অস্ত্র না নাগপাশ না কী সেটা সন্ধান নেওয়া উচিত।