পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাহিনী দেবতার গ্রাস গ্রামে গ্রামে সেই বার্তা রাটি গোল ক্ৰমে মৈত্ৰমহাশয় যাবে সাগরসংগমে তীর্থস্নান লাগি । সঙ্গীদ'ল গেল জুটি প্ৰস্তুত হইল ঘাটে । পুণ্যালোভাতুর আমি তব হব সাথি ।” বিধবা যুবতী, দুখানি করুণ আঁখি মানে না যুকতি, কেবল মিনতি করে— অনুরোধ তার এড়ানো কঠিন বড়ো— ‘স্থান কোথা আর মৈত্ৰ কহিলেন তারে । ‘পায়ে ধরি তব’ বিধবা কহিল কাদি, “স্থান করি লব কোনোমতে এক ধারে । ভিজে গেল মন, তবু দ্বিধাভরে তারে শুধালো ব্ৰাহ্মণ, “নাবালক ছেলেটির কী করিবে তবে ?” উত্তর করিল নারী, ‘রাখাল ? সে রাবে আপন মাসির কাছে । তার জন্ম পরে বহুদিন ভুগেছিনু সূতিকার জ্বরে, বাচিব ছিল না। আশা ; অন্নদা। তখন আপন শিশুর সাথে দিয়ে তারে স্তন মানুষ করেছে। যত্নে- সেই হতে ছেলে মাসির আদরে আছে মারি কোল ফেলে । দুরন্ত মানে না করে, করিলে শাসন মাসি আসি আশ্রমজলে ভরিয়া নয়ন কোলে তারে টেনে লয় । সে থাকিবে সুখে মার চেয়ে আপনার মাসিমার বুকে ।” সম্মত হইল বিপ্ৰ । মোক্ষদা সত্বর প্ৰস্তুত হইল বাধি জিনিস-পত্তর, প্ৰণমিয়া গুরুজনে, সখীদলবলে ভাসাইয়া বিদায়ের শোক-আশ্রমজলে । ঘাটে আসি দেখে- সেন্থা আগেভাগে ছুটি রাখাল বসিয়া আছে তরী-’পরে উঠি নিশ্চিন্ত নীরবে । ‘তুই হেথা কেন ও রে’ মা শুধালো ; সে কহিল, ‘যাইব সাগরে ৷” “যোইবি সাগরে ! আরে, ওরে দস্য ছেলে, নেমে আয় । পুনরায় দৃঢ় চক্ষু মেলে সে কহিল দুটি কথা, ‘যাইব সাগরে ৷” brふ