পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

臀硬 ২৬৫ কমলাদেবী কহিলেন, “আমি জানি তোমার কী হারাইয়াছে। অামার একটা কথা যদি রাখ তো খুজিয়া দিতে পারি।” ইন্দ্রকুমার বলিলেন, “আচ্ছা রাখিব।” ." কমলাদেবী বলিলেন, “তবে শোনো। আজ তুমি শিকার করিতে যাইতে পরিবে না। এই লও তোমার চাবি।” ইন্দ্রকুমার বলিলেন, “সে হয় না—এ-কথা রাখিতে পারি না।” কমলাদেবী বলিলেন, “চন্দ্রবংশে জন্সিয়া এই বুঝি তোমার আচরণ। একটা সামান্ত প্রতিজ্ঞ রাখিতে পার না ।” ইন্দ্রকুমার হাসিয়া বলিলেন, “আচ্ছা, তোমার কথাই রহিল। আজ আমি যাইব না।” কমলাদেবী। তোমাদের আর কিছু হারাইয়াছে ? মনে করিয়া দেখে দেখি । ইন্দ্রকুমার । কই, মনে পড়ে না তো । কমলাদেবী। তোমাদের সাত-রাজার-ধন মানিক ? তোমাদের সোনার চাদ ? ইন্দ্রকুমার মৃদু হাসিয়া ঘাড় নাড়িলেন। কমলাদেবী কহিলেন, “তবে এস, দেখোসে ।” বলিয়া অস্ত্রশালার দ্বারে গিয়া দ্বার খুলিয়া দিলেন। কুমার দেখিলেন রাজধর ঘরের মেজেতে চুপ করিয়া বসিয়া আছেন— দেখিয়া হে। হো করিয়া হাসিন্ধা উঠিলেন—“এ কী, রাজধর অস্ত্রশালায় যে ।” কমলাদেবী বলিলেন, “উনি আমাদের ব্ৰহ্মাস্ত্র ।” ইন্দ্রকুমার বলিলেন, “তা বটে, উনি সকল অস্ত্রের চেয়ে তীক্ষ।” রাজধর মনে মনে বলিলেন, “তোমাদের জিহবার চেয়ে নয়।” রাজধর ঘর হইতে বাহির হইয়া বাচিলেন । তখন কমলাদেৰী গম্ভীর হইয়া বলিলেন, “না কুমার, তুমি শিকার করিতে যাও। আমি তোমার সত্য ফিরাইয়া লইলাম।” ইন্দ্রকুমার বলিলেন, “শিকার করিব ? আচ্ছা।” বলিয়া ধনুকে তীর যোজনা করিয়া অতিধীরে কমলাদেবীর দিকে নিক্ষেপ করিলেন । তীর তাহার পায়ের কাছে পড়িয়া গেল—কুমার বলিলেন, “আমার লক্ষ্য ভ্ৰষ্ট হইল।” কমলাদেবী বলিলেন, “না, পরিহাস না। তুমি শিকারে স্বাও ।” ইন্দ্রকুমার কিছু বলিলেন না। ধন্থর্বাণ ঘরের মধ্যে ফেলিয়া বাহির হইয়া গেলেন। যুবরাজকে বলিলেন, "দাদা, আজ শিকারের স্ববিধা হইল না ।” চন্দ্রনারায়ণ ঈষৎ হাসিয়া বলিলেন, “বুঝিয়াছি।” r