পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বন-ফুল বলিতেন যার দেশে মরণ হইলে শেষে । যেতে হয়, সেথাই কি নিবাস তোমার ?-- নাম তার স্বৰ্গভুমি, আমারে সেথায় তুমি লীয়ে চল, দেখি গিয়া পিতায় মাতায় ! - লীয়ে চল দেব তুমি আমারে সেথায় । যাইব মায়ের কোলে, জননীরে মাতা ব’লে আবার সেখানে গিয়া ডাকিব তাহারে । দাড়ায়ে পিতার কাছে জল দিব গাছে গাছে, সঁপিব তাহার হাতে গাথি ফুলহারে । হাতে লয়ে শুকপাখি বাবা মোর নাম ডাকি ‘কমলা’ বলিতে আহা শিখাবেন তারে ! লয়ে চল, দেব, তুমি সেথায় আমারে ! জননীর মৃত্যু হ’লে, ওই হােথা গাছতলে রাখিয়াছিলেন তারে জনক তখন ! মুছিয়া পথিক তবে ধীরে ধীরে বলে, “আইস আমার সাথে, স্বৰ্গরাজ্য পাবে হাতে দেখিতে পাইবে তথা পিতায় মাতায় । নিশা হ’ল অবসান, পাখিরা করিছে গান, ধীরে ধীরে বহিতেছে প্ৰভাতের বায় ! আঁধার ঘোমটা তুলি প্ৰকৃতি নয়ন খুলি চারি দিক ধীরে' যেন করিছে বীক্ষণ গাছপালা পুষ্প লতা করিছে বর্ষণ ! হোথা বরফের রাশি, মত দেহ রেখে আসি হিমানীক্ষেত্রের মাঝে করায়ে শয়ান, এই লয়ে যাই চ’লে, মুছে ফেল অশ্রুজালেঅশ্রুবারিধারে আহা পূরেছে নয়ান ।” পথিক এতেক কয়ে মৃত দেহ তুলে লয়ে হিমানীক্ষেত্রের মাঝে করিল প্রোথিত । কত ভাবে পথিকের চিত্ত আলোড়িত । ভবিষ্যৎ-কলাপনে কত কী আপন মনে দেখিছে, হািদয়াপটে আঁকিতেছে কতদেখে পূৰ্ণচন্দ্ৰ হাসে নিশিরে রজতবাসে ঢাকিয়া, হৃদয় প্ৰাণ করি। অবারিতজাহ্নবী বহিছে ধীরে, বিমল শীতল নীরে 8ve