পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

وموم\ ?6 রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী দশম সৰ্গ মুরলা যার কোনো রূপ নাই, যার কোনো গুণ নাই, তবুও যে হতভাগ্য ভালোবাসে মনে, দুই দিন বেঁচে থাকে, কেহ নাহি জানে তাকে, ভালোবাসে, দুঃখ সহে, মরে গো বিজনে । ক্ষুদ্র তৃণফুল এক জন্মে অন্ধকারে, দুই দণ্ড বেঁচে থাকে কীটের আগার— শুকায়ে পড়ে সে নিজ কাটার মাঝারে, নিজেরি বঁকাটার মাঝে সমাধি তাহার । কি কথা কোস রে তুই অকৃতজ্ঞ মন ! স্নেহময় দয়াময় কবি সে আমার, এই তৃণফুলেরে কি করে নি যতন ? এরেও কি রাখে নাই। হািদয়ে তাহার ? ছেলেবেলা হতে মোরে রেখেছেন পাশে । যখনি পূরিত মন নব গীতোঙ্গস্থসে আমারেই তাড়াতাড়ি শুনাতেন। তিনি, এত তার ছিল সঙ্গী আছিল সঙ্গিনী ! এত যে পাইনু, তারে কি পারিনু দিতে ? মুরলার যাহা কিছু ছিল- ভালোবাসাক্ষুদ্র এই হৃদয়ের সুখ দুঃখ আশা ! একটু পারি নি তারে সাত্মনা করিতে, মুছাই—নি এক বিন্দু নয়নের ধারযাহা কিছু সাধ্য ছিল করেছি। আমার ! আমি যদি না হতেম বাল্যাসখী তার, নলিনীবালারে যদি পেতেন সঙ্গিনী, করিতে হত না তারে এত হাহাকারকতই না সুখী আহা হতেন গো তিনি ! বিধাতা ! বিধাতা ! যদি তাই গো করিতে ! মুরলা জন্মিল কেন নলিনী থাকিতে ! এখনো কেন গো তার হয় না মরণ ? এ সংসারে মুরলারে কার প্রয়োজন ?” ওই আসিছেন কবি !- এসো কবি!-- এসো কবি ! একবার অতি কাছে এসো মুরলার ! তুমি যবে কাছে থাক কবি গো আমারআপনারে ভুলে যাই— ওই মুখপানে চাই তোমা ছাড়া কিছু মনে নাহি থাকে। আর ! তুমি যবে দূরে থাক, কবি গো, তখন আপনারি ক্ষুদ্র দুঃখে থাকি অচেতন ! বড় যে দুর্বল দীন মুরলা তোমার !