পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Qaの দুই বাহু বাড়াইয়া করি প্রাণপণ তাড়াতাড়ি ছুটে গিয়ে করি আলিঙ্গনছায়া শুধু- ছায়া শুধু- হৃদয় না। পূরেতা চেয়ে রহে না কেন শত ক্রোশ দূরে ? আমার এ উৰ্দ্ধশাস পিপাসিত মন নাহি অনুভবে তার হৃদয়স্পন্দন । মন চায় হাতে তার রাখি মোর হাত বুকে তার মাথা রাখি করি অশ্রুপাত ! সেই তো ধরিনু হাত বুকে মাথা রাখি, দৃঢ় আলিঙ্গন তারে করি থাকি থাকিকিন্তু এ কি হল দায়, এ কিসের মায়া ? কিছু না ছুইতে পাই, ছায়া সব ছায়া ! তাই ভাবি, মন মোর যা কিছু পেয়েছে।” সকলোরি মাঝে বুঝি অভাব রয়েছে ! তৃষিত হৃদয় চায় ভালোবাসা যত ললিতা ফিরায়ে বুঝি দেয় নাকো তত ! আমি চাই এক সুরে দুই হৃদি বাজে, আবরণ নাহি রায় দুজনার মাঝে ! তেমনি দোহার হৃদি হেরিবে দোহায়পড়িবে উভের ছায়া উভয়ের গায় ! কিন্তু কেন, ললিতার এত কেন লাজ ! এত কেন ব্যবধান দুজনার মাঝ ? মিলিবার তরে যাই হইয়া অধীর, মাঝেতে কেন রে হেন লৌহের প্রাচীর ? আমি যাই তাড়াতাড়ি করিতে আদর, তারে হেরে উল্লাসেতে নাচে গো অন্তর, মিলিবারে অৰ্দ্ধপথে সে আসে না ছুট তার মুখে একটিও কথা নাহি ফুটে ! জানি গো ললিতা মোরে ভালোবাসে মনে, যাতে আমি ভালো থাকি করে প্রাণপণেকিন্তু তাহে কিছুতেই তৃপ্ত নহে প্ৰাণ ! দুজনার মাঝে কেন এত ব্যবধান ? যেমন নিজের কাছে লাজ নাহি থাকে তেমনিই মনে কেন করে না। আমাকে ? কিছুই গো হল না ! সেই সব, সেই-সব- সেই হাহাকাররব সেই অশ্রাবারিধারা হৃদয়বেদনা !