পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৮১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ܓ ܠ ܪ* কেশপাশ চারি পাশে পড়িলা খুলিয়া । সুকুমার মুখখানি রাখি স্কন্ধ্যোপারে, দ্রুত পদে প্ৰবেশিল কুটারভিতরে। কতক্ষণ-পরে তবে লভিয়া চেতন ললিতা সুধীরে অতি মেলিল নয়ন । দেখিল যুবক এক রয়েছে আসীন, বিশাল নয়ন তার নিমেষবিহীনকুঞ্চিত কুন্তলরাশি গৌর গ্ৰীবা-’পরে এলাইয়া পড়ি আছে অতি অনাদরে । সরমে সম্বরে তার শিথিল অঞ্চল । ভয়েতে অবশ দেহ, দুরু দুরু হিয়াআকুল হইয়া কিছু না পায় ভাবিয়া । সহসা তাহার মনে পড়িল সকলিসহসা উঠিল বসি নববলে বলী । সুরেশের মুখপানে চাহিয়া চাহিয়া পাগলের মতো বাংলা উঠিল কহিয়া, “কেন বঁাচাইলে মোরে কহ মোরে কহদুই প্ৰণয়ীর কেন ঘটালে বিরহ ? অনন্ত মিলন যবে হইল অদূর দিও না তাপসবর বাধা এক রতিমরিব- নিভােব প্ৰাণ সাগরের জলে, মিলিব সখার সাথে নীলসিন্ধুতলে, নিম্নে কিছু পশিবে না কোলাহল তার ” তৃতীয় সৰ্গ মরমের ভার বহি দারুণ যাতনা সহি ললিতা সে কাটাইছে দিন । নয়নে নাই। সে জ্যোতি হাদয় অবশ্য অতি, শরীর হইয়া গেছে ক্ষীণ । আলুথালু কেশপাশ, বাধিতে নাহিক আশ, উডিয়া পড়িছে থাকি থাকি । কী করুণ মুখখানি, একটি নাইক বাণী, কেঁদে কেঁদে শ্রান্ত দুটি আঁখি । যে দিকে চরণ ধায় সে দিকে চলেছে হয়, কিছুতে ভুক্ষেপ নাই মনে ।