পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পগুচ্ছ : ుet আমি জিজ্ঞাসা করলুম, “মেয়ের ম?” । বললেন, “আমার কথা বোলো না। আমি তোমাকে জানি, আমার মেয়ের মনও জানি, তার বেশি জানবার জন্তে নক্ষত্ৰলোকে ছোটবার শখ নেই আমার।” আমার মন উঠল বিদ্রোহী হয়ে । বললেন, “এমনতরো অবাস্তব বাধা মানাই অন্তায় । কিন্তু, যা অবাস্তব তার গায়ে ঘা বসে না । - তার সঙ্গে লড়াই করব কী দিয়ে।” h F এ দিকে মেয়ের সম্বন্ধের কথা আসতে লাগল নানা দিক থেকে গ্ৰহতারকার অসম্মতি নেই এমন প্রস্তাবও ছিল তার মধ্যে। মেয়ে জিদ করে বলে বসল, সে চিরকাল কুমারী থাকবে, বিদ্যার সাধনাতেই যাবে তার দিন । বাপ মানে বুঝলেন না, তার মনে পড়ল লীলাবতীর কথা । মা বুঝলেন, গোপনে জল পড়তে লাগল তার চোখ দিয়ে। অবশেষে একদিন মা আমার হাতে একখানি কাগজ দিয়ে বললেন, “স্থনেত্রার ঠিকুজি । এই দেখিয়ে তোমার জন্মপত্রী সংশোধন করিয়ে নিয়ে এসো। আমার মেয়ের অকারণ দুঃখ সইতে পারব না।” পরে কী হল বলতে হবে না। ঠিকুজির অঙ্কজাল থেকে স্বনেত্রাকে উদ্ধার করে আনলেম । চোখের জল মুছতে মুছতে মা বললেন, “পুণ্যকর্ম করেছ, বাছা।” তার পরে গেছে একুশ বছর কেটে । 8 হাওয়ার বেগ বাড়তে চলল, বৃষ্টির বিরাম নেই। স্থনেত্রাকে বললেম, “আলোট লাগছে চোখে, নিবিয়ে দিই।” নিবিয়ে দিলেম । বৃষ্টিধারার মধ্যে দিয়ে রাস্তার ল্যাম্পের ঝাপসা আভা এল অন্ধকার ঘরে। সোফার উপরে মুনেত্রাকে বসালেম আমার পাশে । বললেম, “মুনি, আমাকে তোমার যথার্থ দোসর বলে মান তুমি?” “এ আবার কী প্রশ্ন হল তোমার। উত্তর দিতে হবে নাকি ৷” “তোমার গ্ৰহতারা যদি না মানে ?” “নিশ্চয় মানে, আমি বুঝি জানি নে ?” “এতদিন তো একত্রে কাটল আমাদের, কোনো সংশয় কি কোনোদিন উঠেছে তোমার মনে ৷” “আমন সব বাজে কথা জিজ্ঞাসা কর যদি রাগ করব ।” “স্বনি, দুজনে মিলে দুঃখ পেয়েছি অনেকবার। আমাদের প্রথম ছেলেটি মারা