পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - পশ্চিমবঙ্গ সরকার.pdf/৮২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রোগশয্যায়

অবিচ্ছেদে দেখা দিবে দেশহীন কালহীন আদিজ্যোতি, শাশ্বত প্রকাশপারাবার, সুর্য যেথা করে সন্ধ্যাস্নান, যেথায় নক্ষত্র যত মহাকায় বুদবুদের মতাে উঠিতেছে ফুটিতেছে-- সেথায় নিশান্তে যাত্রী আমি চৈতন্যসাগর-তীৰ্থপথে।

উদয়ন ২৪ নভেম্বর ১৯৪০ । প্রাতে


২১

সকালে জাগিয়া উঠি ফলদানে দেখিনু গােলাপ; প্রশ্ন এল মনে-- যুগ-যুগান্তের আবর্তনে সৌন্দর্যের পরিণামে যে শক্তি তােমারে আনিয়াছে অপূর্ণের কুৎসিতের প্রতি পদে পীড়ন এড়ায়ে, সে কি অন্ধ, সে কি অন্যমনা, সেও কি বৈরাগ্যব্রতী সন্ন্যাসীর মতো সুন্দরে ও অসুন্দরে ভেদ নাহি করে-- শুধু, জ্ঞানক্রিয়া, শুধু বলক্রিয়া তার, বােধের নাইকো কোনো কাজ? কারা তর্ক করে বলে, সৃষ্টির সভায় সুশ্রী কুশ্রী বসে আছে সমান আসনে-- প্রহরীর কোনাে বাধা নাই। আমি কবি তৰ্ক নাহি জানি, এ বিশ্বের দেখি তার সমগ্র স্বরূপে লক্ষকোটি গ্ৰহতারা আকাশে আকাশে বহন করিয়া চলে প্রকাণ্ড সুষমা, ছন্দ নাহি ভাঙে তার সুর নাহি বাধে, বিকৃতি না ঘটায় স্খলন; ঐ তাে আকাশে দেখি স্তরে স্তরে পাপড়ি মেলিয়া জ্যোতির্ময় বিরাট গােলাপ।

উদয়ন ২৪ নভেম্বর ১৯৪০ । প্ৰাতে৩-৫১