পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*२ রবীন্দ্র-রচনাবলী শৈশবসন্ধ্যা ধীরে ধীরে বিস্তারিছে ঘেরি চারিধার শ্রাস্তি, আর শান্তি, আর সন্ধ্যা-অন্ধকার, মায়ের অঞ্চলসম । দাড়ায়ে একাকী মেলিয়া-পশ্চিমপানে অনিমেষ আঁখি স্তব্ধ চেয়ে আছি । আপনারে মগ্ন করি অতলের তলে, ধীরে লইতেছি ভরি জীবনের মাঝে— আজিকার এই ছবি, জনশূন্ত নদীতীর, অস্তমান রবি, স্নান মুছাতুর আলো— রোদন-অরুণ, ক্লাস্ত নয়নের যেন দৃষ্টি সকরুণ স্থির বাক্যহীন,– এই গভীর বিষাদ, জলে স্থলে চরাচরে শ্রান্তি অবসাদ । সহসা উঠিল গাহি কোনখান হতে বন-অন্ধকারঘন কোন গ্রামপথে যেতে যেতে গৃহমুখে বালক-পথিক । উচ্ছসিত কণ্ঠস্বর নিশ্চিস্ত নিভীক কঁাপিছে সপ্তম কুরে, তীব্র উচ্চতান সন্ধ্যারে কাটিয়া যেন করিবে দুখান । দেখিতে না পাই তারে। ওই যে সম্মুখে প্রাস্তরের সর্বপ্রাস্তে, দক্ষিণের মুখে, আখের খেতের পারে, কদলী সুপারি নিবিড় বাশের বন, মাঝখানে তারি বিশ্রাম করিছে গ্রাম, হোথা আঁখি ধায় । হোথা কোন গৃহপানে গেয়ে চলে যায় কোন রাখালের ছেলে, নাহি ভাবে কিছু, নাহি চায় শূন্তপানে, হি আগুপিছু ।