পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী ہوا ہۂ অপরিচিত পুরুষের প্রতি এতটা পরিপূর্ণ বিশ্বাস ও নির্ভরের কথা বললেন অথচ সেটা কেমন স্বাভাবিক সরল শুনতে হল— কিছুমাত্র বাড়াবাড়ি মনে হল না। এই রকম স্ত্রীলোক দেখলে পুরুষগুলোকে নিতাস্ত আনাড়ি জড়ভরত মনে হয়। এই দুটি-চারটি কথা কয়েই মনে হচ্ছে যেন ওঁর সঙ্গে আমার চিরকালের জানাশোনা আছে— যেন ওঁর কাজ করা, ওঁর সেবা করা আমার একটা পরম কর্তব্য । কিন্তু নিবারণবাবুর সঙ্গে রানীর আলাপ আছে শুনে আমার ভয় হচ্ছে পাছে আমার স্ত্রীর কথা সমস্ত শুনতে পান। ছি ছি, সে বড়ো লজ্জার বিষয় হবে । উনি হয়তো ঠিক আমার মনের ভাবটা বুঝতে পারবেন না, আমাকে কী মনে করবেন কে জানে। আমি আজই নিবারণবাবুর বাড়ি গিয়ে আমার স্ত্রীকে নিয়ে আসব। দ্বিতীয় দৃশ্য কমলমুখীর গৃহ নিবারণ ও কমলমুখী কমলমুখী। আমার জন্যে আপনি আর কিছু ভাববেন না— এখন ইন্দুর এই গোলটা চুকে গেলেই বাচা যায় ! নিবারণ। তাই তো মা, আমাকে ভারি ভাবনা ধরিয়ে দিয়েছে । আমি এদিকে শিবু ডাক্তারের সঙ্গে কথাবার্তা একরকম স্থির করে বসে আছি, এখন তাকেই বা কী বলি, ললিত চাটুজ্যেকেই বা কোথায় পাওয়া যায়, আর সে বিয়ে করতে রাজি হয় কি না তাই বা কে জানে । কমলমুখী । সে জন্যে ভাববেন না কাকা । আমাদের ইন্দুকে চোখে দেখলে বিয়ে করতে নারাজ হবে এমন ছেলে কেউ জন্মায়নি । নিবারণ। . ওদের দেখাশুনা হয় কী করে । কমলমুখী । সে আমি সব ঠিক করেছি। নিবারণ। তুমি কী করে ঠিক করলে মা । কমলমুখী। অামি ওঁকে বলে দিয়েছি ওঁর সমস্ত বন্ধুকে নিমন্ত্রণ করে খাওয়াতে । তা হলে সেই সঙ্গে ললিতবাবুও আসবেন, তার পর একটা কোনো উপায় বের করা বাবে ।