পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চোখের বালি 8©ግ , মহেন্দ্র সংকোচের সহিত বিছানায় বসিল। রাজলক্ষ্মী কছিলেন, “মহিন, তোর যেখানে ইচ্ছা তুই থাকিস, কিন্তু আমার বউমাকে তুই কষ্ট সিনে ৷” মহেন্দ্র চুপ করিয়া রহিল। রাজলক্ষ্মী কহিলেন, “আমার মন্দ কপাল, তাই আমি আমার এমন লক্ষ্মী বউকে চিনিতে পারি নাই”— বলিতে বলিতে রাজলক্ষ্মীর গলা ভাঙিয়া আসিল,— “কিন্তু তুই তাহাকে এতদিন জানিয়া, এত ভালোবাসিয়া, শেষকালে এত দুঃখের মধ্যে ফেলিলি কী করিয়া ।” রাজলক্ষ্মী আর থাকিতে পারিলেন না, কাদিতে লাগিলেন । মহেন্দ্র সেখান হইতে কোনোমতে উঠিয়া পালাইতে পারিলে বাচে, কিন্তু হঠাৎ উঠিতে পারিল না । মার বিছানার প্রাস্তে অন্ধকারে নিস্তব্ধ হইয়া বসিয়া রহিল। অনেকক্ষণ পরে রাজলক্ষ্মী কহিলেন, “আজ রাত্রে তো এখানেই আছিস ?” মহেন্দ্র কহিল, “না।* রাজলক্ষ্মী জিজ্ঞাসা করিলেন, "কখন ষাবি ।” মহেন্দ্র কহিল, “এখনই ।” রাজলক্ষ্মী কষ্টে উঠিয়া বসিয়া কহিলেন, “এখনই ? একবার বউমার সঙ্গে ভালো করিয়া দেখাও করিয়া যাবি না ?” মহেন্দ্র নিরুত্তর হইয়া রহিল । রাজলক্ষ্মী কহিলেন, “এ-কয়টা দিন বউমার কেমন করিয়া কাটিয়াছে, তাহা কি তুই একটু বুঝিতেও পারিলি না। ওরে নির্লজ্জ, তোর নিষ্ঠুরতায় আমার বুক ফাটিয়া গেল।” বলিয়া রাজলক্ষ্মী ছিন্ন শাখার মতো শুইয়া পড়িলেন। মহেন্দ্র মার বিছানা ছাড়িয়া বাহির হইয়া গেল। অতি মৃদুপদে নিঃশব্দগমনে সে সিড়ি দিয়া তাহার উপরের শয়নঘরে চলিল। আশার সহিত দেখা হয়, এ তাহার ইচ্ছা ছিল না। 略 মহেন্দ্র উপরে উঠিয়াই দেখিল, তাহার শয়নগৃহের সম্মুখে ষে ঢাকা ছাদ অাছে, সেইখানে আশা মাটিতে পড়িয়া। সে মহেঞ্জের পায়ের শব্দ পায় নাই, হঠাৎ তাহাকে সম্মুখে উপস্থিত দেখিয়া তাড়াতাড়ি কাপড় সারিয়া লইয়া উঠিয়া বসিল । এই সময়ে মহেন্দ্র যদি একটিবার ভাকিত “চুনি”— তবে তখনই সে মহেঞ্জের সমস্ত অপরাধ যেন নিজেরই মাথায় তুলিয়া লইয়া ক্ষমাপ্রাপ্ত অপরাধিনীর মতো মহেন্দ্রের দুই পা জড়াইয়া ধরিয়া তাহার জীবনের সমস্ত কান্নাটা কাদিয়া লইত । কিন্তু মহেন্দ্র সে প্রিয়-নাম ডাকিতে পারিল না । যতই সে চেষ্টা করিল, ইচ্ছা করিল, যতই সে বেদনা পাইল, এ-কথা তুলিতে পারিল না যে, আজ আশাকে আদর করা শূন্তগর্ত পরিহাস واt N) جسے 9\