পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চোখের বালি & e (? মহেন্দ্র নিশ্চিন্তু হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, “কাকীমা কোথায় ।” আশা তাহার ঘর দেখাইয়া দিল । আশার এই দৃঢ়তা ও সংযম দেখিয়া বিনোদিনীও আশ্চর্য হইয়া গেল । भएट्टा छांकिढ, *कांकौभां ।* অন্নপূর্ণ যদিও ভোরে স্বান করিয়া লইয়া এখন পূজায় বসিবেন স্থির করিয়াছিলেন, তবুও তিনি কহিলেন, “আয় মহিন, আয় ।” মহেন্দ্র তাহাকে প্রণাম করিয়া কহিল, "কাকীমা, আমি পাপিষ্ঠ, তোমাদের কাছে আসিতে আমার লজ্জা করে ।” 尊 অন্নপূর্ণ কহিলেন, “ছি ছি, ও-কথা বলিসনে মহিন— ছেলে ধুলা লইয়াও মার কোলে আসিয়া বসে।” মহেন্দ্র । কিন্তু আমার এ-ধুলা কিছুতেই মুছিবে না কাকীমা । অন্নপূর্ণ। দুই-একবার ঝাড়িলেই ঝরিয়া যাইবে । মহিন, ভালোই হইয়াছে । নিজেকে ভালো বলিয়া তোর অহংকার ছিল, নিজের পরে বিশ্বাস তোর বড়ো বেশি ছিল, পাপের ঝড়ে তোর সেই গর্বটুকুই ভাঙিয়া দিয়াছে,আর কোনো অনিষ্ট করে নাই । মহেন্দ্র। কাকীমা এবার তোমাকে আর ছাড়িয়া দিব না, তুমি গিয়াই আমার এই দুৰ্গতি হইয়াছে । অন্নপূর্ণ । আমি থাকিয় যে-দুৰ্গতি ঠেকাইয়া রাখিতাম, সে-দুৰ্গতি একবার ঘটিয়া যাওয়াই ভালো । এখন আর তোর আমাকে কোনো দরকার হইবে না । দরজার কাছে আবার ডাক পড়িল, “কাকীমা, আহ্নিকে বসিয়াছ নাকি ।” অন্নপূর্ণ কহিলেন, “না, তুই আয় ।” বিহার ঘরে প্রবেশ করিল। এত সকালে মহেন্দ্রকে জাগ্রত দেখিয়া কহিল, "মহিনদা, আজ তোমার জীবনে এই বোধ হয় প্রথম সূর্যোদয় দেখিলে !" মহেন্দ্ৰ কহিল, “ই বিহারী, আজ আমার জীবনে প্রথম সূর্বোদয় । বিহারীর বোধ হয় কাকীমার সঙ্গে কোনো পরামর্শ আছে— আমি যাই ।” বিহারী হাসিয়া কহিল, “তোমাকেও না হয় ক্যাবিনেটের মিনিস্টার করিয়া লওয়া গেল। তোমার কাছে আমি তো কখনো কিছু গোপন করি নাই— যদি আপত্তি না কর, আজও গোপন করিব না ।” মহেন্দ্র। আমি আপত্তি করিব। তবে আর দাবি করিতে পারি না বটে। তুমি যদি আমার কাছে কিছু গোপন না কর, তবে আমিও আমার প্রতি আবার শ্রদ্ধা করিতে পারিব ।