পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

4 ግb” রবীন্দ্র-রচনাবলী বোধের উত্ৰেক হইতেছে না কেন ? পরের নিকট প্রার্থনা করাকেই কর্ম বলিয়া গৌরব করিয়াছি, তাহার পরে পরকে নিন্দা করিয়া বলিতেছি,— এত কাজ করি, তাহার পারিশ্রমিক পাই না কেন । একবার যথার্থ কর্মের সহিত যথার্থ শক্তিকে নিযুক্ত করা যাক, যথার্থ নিষ্ঠার সহিত যথার্থ উপায়কে অবলম্বন করা যাক, তাহার পরেও যদি সফলতা লাভ করিতে না পারি তবু মাথা তুলিয়া বলিতে পারিব— যত্নে কৃতে যদি ন সিধ্যতি কোইত্র দোষ । ংকটকে স্বীকার করিয়া, দুঃসাধ্যতা সম্বন্ধে অন্ধ না হইয়া, নিজেকে আসন্ন ফললাভের প্রত্যাশায় না ভুলাইয়া, এই দুর্ভাগ্য দেশের বিনা-পুরস্কারের কর্মে দুর্গম পথে যাত্রা আরম্ভ করিতে কে কে প্রস্তুত আছ, আমি সেই বীর যুবকদিগকে অন্ত আহবান করিতেছি— রাজদ্বারের অভিমুখে নয়, পুরাতন যুগের তপ:সঞ্চিত ভারতের স্বকীয় শক্তি ষে-খনির মধ্যে নিহিত আছে সেই খনির সন্ধানে । কিন্তু, খনি আমাদের দেশের মর্মস্থানেই আছে— যে জনসাধারণকে অবজ্ঞা করি তাহাদেরই নির্বাক হৃদয়ের গোপন স্তরের মধ্যে আছে। প্রবলের মন পাইবার চেষ্টা ছাড়িয়া দিয়া সেই নিম্নতম গুহার গভীরতম ঐশ্বৰ্ষলাভের সাধনায় কে প্রবৃত্ত হইবে । একটি বিখ্যাত সংস্কৃত শ্লোক আছে, তাহার ঈষৎপরিবতিত অনুবাদ দ্বারা আমার এই প্রবন্ধের উপসংহার করি— উদযোগী পুরুষসিংহ, র্তারি পরে জানি কমলা সদয় । পরে করিবেক দান, এ অসলবাণী কাপুরুষে কয় । পরকে বিস্মরি করো পৌরুষ আশ্রয় আপন শক্তিতে । যত্ব করি সিদ্ধি যদি তবু নাহি হয় দোষ নাহি ইথে ।