পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হাস্যকীেতুক SVC) রোগের চিকিৎসা প্রথম দৃশ্য হারাধন । বাবা ! ডাক্তার-সাহেবের আস্তাবল থেকে হাঁসের ডিম। চুরি করতে গিয়ে আজ আচ্ছা! নাকাল হয়েছি! সাহেব যেরকম তাড়া করে এসেছিল, মরেছিলেম আর-কি ! ভয়ে পালাতে গিয়ে খনার মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেম। পা ভেঙে গেছে— তাতে দুঃখ নেই, প্ৰাণ নিয়ে পালিয়ে এসেছি। এই ঢ়ের। রোগীগুলোকে হাতে পেলে ডাক্তার-সাহেব পটু পটু করে মেরে ফেলে ; আমার কোনো বামেস্যামো নেই, আমাকেই তো সেরে ফেলবার জো করেছিল । এবারে রোজ রোজ আর হাসের ডিম চুরি করব না ; একেবারে আস্ত হাঁস চুরি করব, আমাদের বাড়িতে ডিম পড়বে। নেপথ্য হইতে । হারু ! হারাধন । (সভয়ে) ঐ রে, বাবা এসেছে। আমার একটা পা খোড়া দেখলে মারের চোটে বাবা আর-একটা পা খোড়া করে দেবে। নেপথ্যে পুনশ্চ। হারু ! (নিরুত্তর) হারা ! (নিরুত্তর) হেরো ! পিতার প্রবেশ । হারাধন । (অগ্রসর হইয়া) আজ্ঞে । পিতা। তুই খোড়াচ্ছিস যে ! হারাধনের মাথা-চুলকন পিতা । (সরোষে) পা ভাঙলি কী করে ! হারাধন । (সভয়ে) আজ্ঞে, আমি ইচ্ছে করে ভাঙি নি । পিতা। তা তো জানি, কী করে ভাঙল সেইটে বল-না। হারাধন। জানি নে বাবা! পিতা। তোর পা ভাঙল তুই জানিস নে তো কি ও পাড়ার গোবরা তেলি জানে ? হারাধন । কখন ভাঙল টের পাই নি বাবা ! পিতা। বটে ! এই লাঠির বাড়ি তোর মাথাটা ভাঙলে তবে টের পাবি বুঝি ! সুন্ন। তাড়াতাড়ি হাত দয়া মাথ আচল তবিয়া)ৰ বৰ! ঔ আখটা ধমতে গিয়ে পট (9.8 পিতা। বুঝেছি। তবে বুঝি সেদিনকার মতো ডাক্তার-সাহেবের বাড়িতে হাঁসের ডিম। চুরি করতে গিয়েছিল, তাই তারা মেরে তোর পা ভেঙে দিয়েছে! হারাধন । (চোখ রাগড়াইতে রাগড়াইতে) ই বাবা ! আমার কোনো দোষ নেই। পা আমি নিজে ভাঙি নি, পা তারাই ভেঙে দিয়েছে। পিতা। লক্ষ্মীছাড়া, তোর কি কিছুতেই চৈতন্য হবে না ? হারাধন । চৈতন্য কাকে বলে বাবা ? পিতা । চৈতন্য কাকে বলে দেখবি ? (পিঠে কিল মারিয়া) চৈতন্য একে বলে। হারাধন । এ তো আমার রোজই হয় । পিতা। আমি দেখছি তুমি জেলে গিয়েই মরবো! হারাধন । না বাবা, রোজ চৈতন্য পেলে ঘরে মরব। পিতা । নাঃ, তোকে আর পেরে উঠলেম না।