পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৮৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লোকসাহিত্য broa রাজাকে পুনরায় রাখাল করিবার আশা দুরাশা, এ কথা সকলকেই স্বীকার করিতে হইবে। কিন্তু বৃন্দা বৃন্দাবনের আসল কথা বােঝে, সে জানে নিরাশ হইবার কোনাে কারণ নাই। সে জানে বৃন্দাবন-মথুরায় কাশী-কাঞ্চীর নিয়ম ঠিক খাটে না । বৃন্দে বলে আমি যদি এনে দিতে পারি তবে মোরে কী ধন দিবে বলে তো কিশোরী ৷ শুনে বাণী কমলিনী যেন পড়িল ধন্দেদেহপ্রাণ করেছে দান কৃষ্ণুপদারবিন্দে। এক কালেতে র্যাক সঁপেছি। বিরাগ হলেন তাই । যম-সম কোনো দেবতা রাধিকার নাই ৷ ইহা বই নিশ্চয় কই কোথা পাব ধন । মোর কেবল কৃষ্ণনাম অঙ্গের ভূষণ ॥ " রাজার নন্দিনী মোরা প্রেমের ভিখারি। বঁধুর কাছে সেই ধন লয়ে দিতে পারি। বলছে দূতী শোন শ্ৰীমতী মিলবে শ্যামের সাথে । তখন দুজনের দুই যুগল চরণ তাই দিয়াে মাের মাথে ৷ এই পুরস্কারের কড়ার করাইয়া লইয়া দৃতী বাহির হইলেন। যমুনা পার হইয়া পথের মধ্যে— হাস্যরসে একজনকে জিজ্ঞাসিলেন তবে । কও দেখি কার অধিকারে বসত করা সবে ৷ সে লোক বললে তখন রাজা কৃষ্ণচন্দ্ররায় । মেঘের ধারা রৌদ্রে যেমন লাগল দূতীর গায় ৷ ননিচােরা রাখাল ছোড়া ঠাট করেছে আসি । চাের বিনে তাকে কবে ডাকছে গোকুলবাসী ৷ কৃষ্ণের এই রায়বাহাদুর খেতাবটি দূতীর কাছে অত্যন্ত কৌতুকাবহ বােধ হইল। কৃষ্ণচন্দ্ররায় ! এ তাে আসল নাম নয়। এ কেবল মূঢ় লােকদিগকে ভুলাইবার একটা আড়ম্বর। আসল নাম বৃন্দা জানে। 海 চললেন শেষে কাঙাল বেশে উতরিলেন দ্বারে একদৃষ্টি চেয়ে দেখে কৃষ্ণের বদন ॥ ধড়চূড়া ত্যাগ করিয়ে মুকুট দিয়েছ মাথে। সব অঙ্গে রাজ-আভরণ, বংশী নাইকো হাতে ৷ সোনার মালা কণ্ঠহার। বাহুতে বাজুবন্ধ । শ্বেত চামরে বাতাস পড়ে দেখে লাগে। ধন্দ ৷ নিশান উড়ে, ডঙ্কা মারে, বলছে খবরদার। ব্ৰাহ্মণ পণ্ডিতের ঘটা ব্যবস্থা বিচার ॥ আর এক দরখাস্ত করি শুন দামোদর। যমুনাতে দেখে এলেম এক তরী মনােহর ॥ পূর্বে এক কাণ্ডারী ছিল সর্বলােকে কয়। সে চাের পালালো কোথা তাকে ধরতে হয় ৷