পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

"> е রবীন্দ্র-রচনাবলী সুখের দুখের কথা একটুখানি ভাবব এমন সময় ছিল কোথা । এই জীবনটা ভালো, কিংবা মন্দ, কিংবা যা-হ’ক-একটা-কিছু সে-কথাটা বুঝব কখন, দেখব কখন ভেবে আগুপিছু । একটানা এক ক্লাস্ত স্বরে কাজের চাকা চলছে ঘুরে ঘুরে । বাইশ বছর রয়েছি সেই এক-চাকাতেই বাধা পাকের ঘোরে আঁধা । জানি নাই তো আমি যে কী, জানি নাই এ বৃহৎ বসুন্ধরা কী অর্থে যে ভরা । শুনি নাই তো মানুষের কী বাণী মহাকালের বীণায় বাজে । আমি কেবল জানি, রণধার পরে খাওয়া, আবার খাওয়ার পরে রণধী, বাইশ বছর এক-চাকাতেই বাধা । মনে হচ্ছে সেই চাকাটা—ঐ যে থামল যেন ; থামুক তবে । আবার ওষুধ কেন । বসন্তকাল বাইশ বছর এসেছিল বনের আঙিনায় । গন্ধে বিভোল দক্ষিণ বায় দিয়েছিল জলস্থলের মর্ম-দোলায় দোল ; হেঁকেছিল, “খোল রে দুয়ার খোল ।” সে যে কখন আসত যেত জানতে পেতেম না যে । হয়তো মনের মাঝে সংগোপনে দিত নাড়া ; হয়তো ঘরের কাজে আচম্বিতে ভুল ঘটাত ; হয়তো বাজত বুকে জন্মাস্তরের ব্যথা ; কারণ-ভোলা দুঃখে সুখে হয়তো পরান রইত চেয়ে যেন রে কার পায়ের শব্দ শুনে, বিহবল ফগম্ভনে । তুমি আসতে আপিস থেকে, যেতে সন্ধ্যাবেলায় পাড়ায় কোথা শতরঞ্জ খেলায় ।