পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Re 6 রবীন্দ্র-রচনাবলী অদ্য দলের প্রবেশ প্রথম । শুনেছি বিক্রমবাহু মরে নি । তৃতীয়। না, কিন্তু বিক্রমবাহুর বিচারটা কী রকম হল ? দ্বিতীয়। শুনেছি বিচারকর্তী স্বহস্তে রাজমুকুট পরিয়ে দিয়েছে। তৃতীয় । এটা কিন্তু একেবারেই বোঝা গেল না । দ্বিতীয় । বিচারটা যেন কেমন বেখাপ রকম শোনাচ্ছে । প্রথম । তা তো বটেই। অপরাধ যা কিছু করেছে, সে তো ওই বিক্রমবাহুই । . দ্বিতীয়। আমি যদি বিচারক হতুম, তাহলে কি আর আস্ত রাখতুম ? ওর আর চিহ্ন দেখাই যেত না । তৃতীয়। কী জানি, বিচারকর্তাকে দেখি নে, তার বুদ্ধিটাও দেখা যায় না। প্রথম। ওদের বুদ্ধি বলে কিছু আছে কি ! এর মধ্যে সবই মর্জি। কেউ তো বলবার লোক নেই। দ্বিতীয় । যা বলিস ভাই, আমাদের হাতে শাসনের ভার যদি পড়ত, তাহলে এর চেয়ে ঢের ভালো করে চালাতে পারতুম। তৃতীয় । সে কি একবার করে বলতে । [ সকলের প্রস্থান ঠাকুরদা ও বিক্রমবাহুর প্রবেশ ঠাকুরদা। এ কী বিক্রমরাজ, তুমি পথে যে । বিক্রম । তোমার রাজা আমাকে পথেই বের করেছে। ঠাকুরদা। ওই তো তার স্বভাব । বিক্রম। তার পরে আর নিজের দেখা নেই। ঠাকুরদা। সেও তার এক কৌতুক। 赞 বিক্রম। কিন্তু আমাকে এমন করে আর কতদিন এড়াবে ? যখন কিছুতেই তাকে রাজা বলে মানতেই চাই নি তখন কোথা থেকে কালবৈশাখীর মতো এসে এক মুহূর্তে আমার ধ্বজ পতাকা ভেঙে উড়িয়ে ছারখার করে দিলে আর আজ তার কাছে হার মানবার জন্যে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছি, তার আর দেখাই নেই। ঠাকুরদা। তা হ'ক, সে যতবড়ো রাজাই হ’ক হার-মানার কাছে তাকে হার মানতেই হবে । কিন্তু রাজন, রাত্রে বেরিয়েছ যে । বিক্রম। ওই লজ্জাটুকু এখনও ছাড়তে পারি নি। রাজা বিক্রম থালায় মুকুট সাজিয়ে তোমার রাজার মন্দির খুজে বেড়াচ্ছে, এই যদি দিনের আলোয় লোকে দেখে তাহলে যে তার হাসবে ।