পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৮২

छांब्रख्यथग्नन्त्रि T ఇSS র্তাকে অত্যন্ত বাজল। এমন সময় একদিন এল একটা বিশেষ অবিচারে কঠোরভাবে আহত হয়ে নরেশের কাছে এসে জানাল, “বাবা, আমাকে কলকাতায় বোর্ডিঙে পাঠাও। প্রস্তাবটা তাদের দুজনের পক্ষেই দুঃখকর, কিন্তু বাপ অবস্থা বুঝলেন, এবং .মায়াময়ীর দিক থেকে প্রতিকূল ঝঞ্চাঘাতের মধ্যেও এলাকে পাঠিয়ে দিলেন দূরে। আপন নিষ্করণ সংসারে নিমগ্ন হয়ে রইলেন অধ্যয়ন-অধ্যাপনায় । মা বললেন, “শহরে পাঠিয়ে মেয়েকে মেমসাহেব বানাতে চাও তো বানাও কিন্তু ওই তোমার আদুরে মেয়েকে প্রাণাস্ত ভুগতে হবে শ্বশুরঘর করবার দিনে । তখন জামাকে দোষ দিয়ে না ।” মেয়ের ব্যবহারে কলিকালোচিত স্বাতন্ত্র্যের দুলক্ষণ দেখে এই আশঙ্কা তার মা বারবার প্রকাশ করেছেন । এলা তার ভাবী শাশুড়ীর হাড় জালাতন করবে সেই সম্ভাবনা নিশ্চিত জেনে সেই কাল্পনিক গৃহিণীর প্রতি র্তার অমুকম্প মুখর হয়ে উঠত। এর থেকে মেয়ের মনে ধারণা দৃঢ় হয়েছিল যে, বিয়ের জন্তে মেয়েদের প্রস্তুত হতে হয় আত্মসন্মানকে পঙ্গু করে, ন্যায়-অন্যায়বোধকে অসাড় করে দিয়ে । এলা যখন ম্যাট্‌রিক পার হয়ে কলেজে প্রবেশ করেছে তখন মায়ের মৃত্যু হল। নরেশ মাঝে মাঝে বিয়ের প্রস্তাবে মেয়েকে রাজি করতে চেষ্টা করেছেন। এলা অপূর্ব-মুন্দরী, পাত্রের তরফে প্রার্থীর অভাব ছিল না, কিন্তু বিবাহের প্রতি বিমুখত তার সংস্কারগত। মেয়ে পরীক্ষাগুলো পাস করলে, তাকে অবিবাহিত রেখেই বাপ গেলেন মারা । সুরেশ ছিল তার কনিষ্ঠ ভাই। নরেশ এই ভাইকে মানুষ করেছেন, শেষ পর্যন্ত পড়িয়েছেন খরচ দিয়ে । দু-বছরের মতো তাকে বিলেতে পাঠিয়ে স্ত্রীর কাছে লাঞ্ছিত এবং মহাজনের কাছে ঋণী হয়েছেন। সুরেশ এখন ডাকবিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মচারী। কর্ম উপলক্ষ্যে ঘুরতে হয় নানা প্রদেশে । তারই উপর পড়ল এলার ভার। একান্ত যত্ন করেই ভার নিলেন । সুরেশের স্ত্রীর নাম মাধবী। তিনি ষে-পরিবারের মেয়ে সে-পরিবারে স্ত্রীলোকদের পরিমিত পড়াশুনোই ছিল প্রচলিত ; তার পরিমাণ মাঝারি মাপের চেয়ে কম বই বেশি নয়। স্বামী বিলেত থেকে ফিরে এসে উচ্চপদ নিয়ে দূরে দূরে যখন ঘুরতেন তখন তাকে বাইরের নানা লোকের সঙ্গে সামাজিকতা করতে হত। কিছুদিন অভ্যাসের পরে মাধবী নিমন্ত্রণ-আমন্ত্রণে বিজাতীয় লৌকিকতা পালন করতে অভ্যস্ত হয়েছিলেন। এমন কি, গোরাদের ক্লাবেও পঙ্গু ইংরেজি ভাষাকে সকারণ ও অকারণ হাসির দ্বারা পূরণ করে কাজ চালিয়ে আসতে পারতেন । J 1 এমন সময় মুরেশ কোনো প্রদেশের বড়ো শহরে যখন আছেন এল এল তার ঘরে ; ক্ষপে গুণে বিষ্ঠায় কাকার মনে গর্ব জাগিয়ে তুললে। ওঁর উপরিওআলা বা সহকর্মী