পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পলাতক মা বললেন, “ভুলবি কেন । মনে যদি থাকে তাহার তাপ তাহলে কি তেমন ভীষণ অপমানের চাপ চাপানো যায় আর কণহারে পরে বাইরে কিংবা ঘরে । মনে কি নেই সেদিন যখন দেউড়ি দিয়ে বেরিয়ে এলেম তোদের দুটি সঙ্গে নিয়ে তখন আমার মনে হল যদি আমি স্বপ্নমাত্ৰ হই জেগে দেখি আমি যদি কোথাও কিছু নই তাহলে হয় ভালো । মনে হল শক্র আমার আকাশভরা আলো, দেবতা আমার শক্র, আমার শক্র বসুন্ধরা— মাটির ভালি আমার অসীম লজ্জা দিয়ে ভরা । তাইতে বলি বিশ্বজোড়া সে লাঞ্ছনা তেমন করে পায় না যেন কোনোজনা বিধির কাছে এই করি প্রার্থনা ।” ব্যাপারটা কী ঘটেছিল অল্প লোকেই জানে, বলে রাখি সে-কথা এইখানে । বারে বছর পরে অপূর্ব রায় দেখা দিল কানাইদাদার ঘরে । একে একে তিনটে থিয়েটার ভাঙাগড়া শেষ করে সে হল ক্যাশিয়ার সদাগরের আপিসেতে। সেখানে আজ শেষে তবিল-ভাঙার জাল হিসাবে দায়ে ঠেকেছে সে । হাতে বেড়ি পড়ল বুঝি ; তাই সে এল ছুটে উকিল দাদার ঘরে, সেথায় পড়ল মাথা কুটে । কানাই বললে, “মনে কি নেই ?” অপূর্ব কয় নতমুখে “অনেকদিন সে গেছে চুকেবুকে ।”